1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন

নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন থাকুন: শিক্ষামন্ত্রী

  • Update Time : সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৭১ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাক্রম ২০২২ এর বাস্তবায়ন বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা বিতর্ক নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।

নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা নেই, পরীক্ষা নেই, শিক্ষার্থীরা কিছু শিখছে না- এমন বিষয়কে অপপ্রচার বলে উল্লেখ করে এসবের ব্যাখ্যা দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পড়বে, নিজেরা সক্রিয়ভাবে পড়বে, শিখবে। দলগত কাজ করে আবার তা নিজেরাই উপস্থাপন করবে। শুধু জ্ঞান নয়, দক্ষতাও অর্জন করবে। আর মূল্যায়ন হবে প্রতিটি কাজের। আবার ষান্মাসিক মূল্যায়ন এবং বার্ষিক মূল্যায়নও হবে। কাজেই পরীক্ষা ঠিকই থাকছে, কিন্তু পরীক্ষার ভীতি থাকছে না। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এবং না হওয়া আছে; শুধু তাই নয়, পারদর্শিতার সাতটি স্কেলে তাদের রিপোর্ট কার্ডও আছে।’

নতুন শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞান শিক্ষা সংকোচনের যে অভিযোগ উঠেছে, সে সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘ নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ থেকে দশম পর্যন্ত সব শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি সময় রাখা হয়েছে। কাজেই সার্বিক দিক দিয়ে আগের চেয়ে বিজ্ঞানের গুরুত্ব বেড়েছে, বিষয়বস্তুর পরিধিও বেড়েছে।’

নবম-দশমে বিভাগ বিভাজন না থাকা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,’ ইংল্যান্ডসহ পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের শিক্ষাক্রমেই নবম (ক্ষেত্রবিশেষে দশম) শ্রেণি পর্যন্ত বিষয় নির্বাচনের সুযোগ থাকে না। নবম শ্রেণিতে পৃথিবীর প্রায় কোনো দেশেই বিভাগ বিভাজন করা হয় না। দশম বা একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে সাধারণত বিষয় নির্বাচনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়।’

ব্যয়বহুল শিক্ষা উপকরণ গ্রাম ও শহরের বৈষম্য বাড়িয়ে দিচ্ছে এমন অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দামি উপকরণ, চাকচিক্য বা সৌন্দর্য এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। স্থানীয়, সহজলভ্য ও পুনঃব্যবহারযোগ্য কাগজ ও উপকরণ ব্যবহারের নির্দেশনা বার বার দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যয় বাড়ার কোনো কারণ নেই। আর নোট বই কিংবা কোচিংয়ের খরচ তো লাগবেই না।’

তৃণমূল পর্যায়ে সহজলভ্যতা নিশ্চিত করেই উপকরণ, শিখন-শেখানো পদ্ধতি ইত্যাদি নির্বাচন করা হয়েছে এবং প্রতি ক্ষেত্রেই বিকল্প উপায় রাখা হয়েছে, ফলে বৈষম্য তো নয়ই বরং গ্রামের বিদ্যালয়গুলো ভালো করছে। তাছাড়া কোচিং, গাইড বইয়ের ব্যয় লাগছে না ফলে বৈষম্য কমছে এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীরা ভালো করছে।’

নতুন শিক্ষাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ালেখার জন্য শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে যে তথ্য ছড়িয়েছে তা ভুল বলে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা যখন উচ্চ মাধ্যমিক পাস করবে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন হবে। সেসব কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।’

এ সময় নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একক ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠনের জন্য আরও দু-তিন বছর সময় লাগবে। নতুন শিক্ষাক্রমে যেসব শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন, তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগেই আমরা এ পরিবর্তন আনতে পারবো।’

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে। গত জানুয়ারিতে এরা সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার লক্ষ্যে বই নিয়ে মিথ্যাচার করেছিল। এরা চায় না, শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখতে, চিন্তা করতে শিখুক, অনুসন্ধিৎসু হোক, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করুক। ওরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষাই চালু থাকুক।’

মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোয় ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় কোচিং ব্যবসায়ীরাও অপপ্রচার করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ষষ্ঠ এবং সপ্তমের শিক্ষার্থীদের কোচিং-এ যেতে হয় নি এবং নোট বইয়েরও দরকার হয় নি। অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তায়িত হলে সেসব শিক্ষার্থীরও কোচিং বা নোট বইয়ের প্রয়োজন পড়বেনা। ফলে কোচিং ব্যবসায়ীরা মনে করছেন নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হলে ব্যবসায় মার খাবেন ফলে কিছু অভিভাবকদেরও যুক্ত করে মানববন্ধন করাচ্ছেন। বিদ্যালয়গুলো থেকে জেনেছি তারা আসল অভিভাবক নন। কোনো কোনো অভিভাববক বিভ্রান্তিতে পড়ে যুক্তও হতে পারেন।’

অভিভাবকদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে নিজে যাচাই করুন, সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করুন। স্বার্থান্বেষী কোনো মহলের ফাঁদে পা দেবেন না। যেকোনো পরিবর্তনই মেনে নিতে, খাপ খাইয়ে নিতে কষ্ট হয়। আর রূপান্তরকে মেনে নেওয়া আরও কষ্টকর। কিন্তু বুঝতে হবে- এই রূপান্তর এগিয়ে যাবার জন্য অবশ্যম্ভাবী; এর কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র বিকল্প হলো পিছিয়ে পড়া, নতুন প্রজন্মের জীবনকে ব্যর্থ করে দেওয়া। যা আমরা কিছুতেই হতে দিতে পারি না। অভিভাবকরা সন্তানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভাবুন। তাদের দক্ষ ও যোগ্য মানুষ হবার কথা ভাবুন। তাদের যেকোন পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে উৎকর্ষ লাভের কথা ভাবুন। ভীষণ প্রতিযোগিতার চিন্তা থেকে বেরিয়ে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার চর্চার মধ্য দিয়ে সন্তানের ভালো মানুষ হওয়ার কথা ভাবুন।’

নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ চলছে। তাদের জীবন মানোন্নয়নে সরকার আরও পদক্ষেপ নেবে। কারণ এর কোনো বিকল্প নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews