জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেলে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে বাংলাদেশি নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চাওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করা দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বাংলাদেশে হতাহতের ঘটনায় দেশটির কাছে কী ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে, পরিবারগুলো কার কাছে বিচার চাইবে, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে খুবই সংবেদনশীল। এ বিষয়ে এরইমধ্যে মিয়ানমার সরকারের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ক্ষতিপূরণ চাওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে।
রাখাইন রাজ্য এখন সত্যিকার অর্থে কার দখলে এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। আমি এ ব্যাপারে কী করে বলবো! তাহলে কড়া প্রতিবাদ কী আরাকান আর্মি নাকি জান্তা সরকারকে পাঠানো হলো- জানতে চাইলে সেহেলী সাবরীন বলেন, বাংলাদেশ সরকার থেকে মিয়ানমার সরকার বরাবর আমরা প্রতিবাদ পাঠিয়েছি।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনা-সীমান্তরক্ষীদের ফেরাতে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ঢাকায় মিয়ানমার দূতাবাসের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এবং মিয়ানমারে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। মিয়ানমার সরকার তাদের সেনা ও বিজিপির সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে এরই মধ্যে আগ্রহ ব্যক্ত করছে। এখন যত শিগগির সম্ভব তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সেনাদের ফেরত নিতে জাহাজ আসছে কিনা- এমন প্রশ্নে সেহেলী সাবরীন বলেন, মিয়ানমার সরকার থেকে তাদের জাহাজের রুট পরিকল্পনা জানাবে এবং কোন জাহাজ আসবে, সেটারও বিস্তারিত জানাবে। এখনও পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তবে মিয়ানমারের জাহাজ গভীর সমুদ্র দিয়ে যাবে, কাজেই নিরাপত্তার একটা ইস্যু ছিল, সেটা মনে হয় অতটা সমস্যা হবে না।
মিয়ানমারে চলামান যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশ যে কঠিন ভূ-রাজনীতির সমীকরণে পড়েছে তা থেকে উত্তরণে কী ধরনের কূটনৈতিক তৎতপরতা চালানো হচ্ছে? বাংলাদেশ কোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে যাচ্ছে কি না? – এসব প্রশ্নের উত্তরে সেহেলী সাবরীন বলেন, মিয়ানমারের চলমান সংঘাত তার অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এর ফলে বাংলাদেশের জনসাধারণ, সম্পদ বা সার্বভৌমত্ব কোনোভাবে যেন হুমকির সম্মুখীন না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সুবিধাজনক সময়ে স্বেচ্ছায়, টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সেহেলী সাবরীন বলেন, এ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সর্তক রয়েছে এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে নিউইয়র্কস্থ স্থায়ী মিশন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমারের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। মিয়ানমার সংকট উত্তরণের জন্য আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক যেকোনো উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি অনিবার্যভাবে থাকা প্রয়োজন।
Leave a Reply