জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: মার্কিন নতুন ভিসানীতি আওয়ামী লীগের জন্য একটি মেসেজ বলে মনে করছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, যারা নির্বাচনের ভোট চুরিতে সরাসরি বা একেবারে ইনডাইরেক্টলি জড়িত থাকবে এটা তাদের জন্য। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, মুক্তির সংগ্রামের পথে এটা একটা পদক্ষেপ। আমেরিকার এমন পদক্ষেপ আগামী দিনের নির্বাচনে সহায়ক পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। এটা একটা সিগনাল, একটা বার্তা।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা নির্বাচনের ভোট চুরিতে সরাসরি বা ইনডাইরেক্টলি জড়িত থাকবে এটা তাদের জন্য। তাদের ভিসা বাতিল হবে এবং আমেরিকাতে তাদের কোনো ভিসা দেওয়া হবে না। এর আগে আজ দুপুরে মার্কিন দূতের সঙ্গে দেখা করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শ্যামা ওবায়েদ।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা চলছে। তার প্রতিফলন হিসেবে এগুলো হচ্ছে। অন্যদের বা অন্যদেশের নির্বাচন গুলো নিয়ে এত উদ্বেগ ও আলোচনা হচ্ছে না। আমাদের প্রতিবেশী চার পাঁচটি দেশের নির্বাচনে নিয়ে তো আলোচনা হচ্ছে না। বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে কিনা। এই শঙ্কা থেকে বিভিন্ন বিষয় উঠে আসছে। এবং তার মধ্যে এটা একটা পদক্ষেপ। যেটা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসছে। আগামী দিনে এ দেশের জনগণ নির্বাচনের ভোট দিতে পারবে কিনা? নাকি তারা আবারও বঞ্চিত হবে ভোট থেকে। এই স্টেটমেন্টটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশের জন্য দেয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, যারা নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোট কেন্দ্র দখল করে, ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচনের জয়ী হওয়ার জন্য, এ ধরনের সংগঠন, ব্যক্তি এবং দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সরাসরি অ্যাড্রেস করে। এখানে সংবাদ মাধ্যমের কথার বলেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কথা বলেছে, রাজনৈতিক ব্যক্তির কথা বলেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলেছে, যারা নির্বাচনের ভোট চুরিতে সরাসরি বা একেবারে ইনডাইরেক্টলি জড়িত থাকবে এটা তাদের জন্য। তাদের ভিসা বাতিল হবে এবং আমেরিকাতে তাদের কোনো ভিসা দেওয়া হবে না।
‘বিষয়টা জাতীয় নির্বাচনের দিন শুধু ভোট চুরির জন্য নয় কিন্তু, এখনো ভোট চুরি চলছে প্রতিনিয়ত। মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, হয়রানি এগুলোও তো ভোট চুরি। গুলি করে হত্যা করাটাও তো ভোট চুরি। আমেরিকা জিনিসটাকে ওইভাবেই অ্যাড্রেস করেছে। আগামী নির্বাচনে সম্পৃক্ততা জড়িত যে সংগঠন, ব্যক্তি হিসেবে সবাইকে অ্যাড্রেস করেছে। এটা ইঙ্গিত দিয়েছে যারা যারা জড়িত থাকবে। আমেরিকা বলেছে, তারা এখন থেকে বিষয়টা অ্যাপ্লাই করেছে’—যোগ করেন খসরু।
এটা আপনাদের সফলতা কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে আমাদের সফলতা বলতে কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষ যেদিন ভোট দিতে পারবে। ভোট দিয়ে তাদের জনপ্রতিনিধি ও তাদের সরকার করতে পারবে। সেটা হবে বাংলাদেশের মানুষের সফলতা। সেই উদ্দেশ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপের মধ্যে এটা হয়তো একটা ভালো পদক্ষেপ। এবং দেশবাসী এটাকে সাদরে গ্রহণ করেছে। এদের মাধ্যমে তারা আশা করছে যারা ভোট চুরি সম্পৃক্ত থাকে সেটা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে হোক, বিচার বিভাগে হোক, মিডিয়াতে বা গণমাধ্যমে হোক, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে হোক সকলের প্রতি একটা পরিষ্কার বার্তা। এর থেকে পরিষ্কার বার্তা কিন্তু আর হতে পারে না। তারা নাম ধরে ধরে বলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশ মানুষকে অর্জন করতে হবে। এটা আমাদের মুক্তির দাবি। আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র থাকবে কিনা। মানবাধিকার থাকবে কিনা। গণমাধ্যমে স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, মুক্তির সংগ্রামের পথে এটা একটা পদক্ষেপ। অনেকগুলো পদক্ষেপ দিতে হবে যাতে তারা আগামীতে ভোট চুরি করে জোর করে ক্ষমতায় না থাকতে পারে। আগামী নির্বাচনে যারা ভোট চুরি করবে বা নির্দেশ দেবে, শুধু তারাই নয়। তার পরিবারের সদস্যরা কিন্তু এ ভিসা থেকে বঞ্চিত হবে এবং বাতিল করা হবে।
আমীর খসরু বলেন, যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। নির্বাচন তো পরের কথা। নির্বাচনের পরিবেশ থাকতে হবে লেভেল প্লেয়িং করতে হবে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকতে হবে। আমাদের জনসভায়, র্যালিতে মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার কারণেই তো এই প্রশ্নগুলো আসতেছে বারবার। যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণ তাদের কথা বলতে পারতেছে না। বাক স্বাধীনতা নেই। জীবনে নিরাপত্তা নেই। আইনের শাসন নেই। সভা মিছিল করতে পারতেছে না। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ভয়ভীতি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ভোটের আগে থেকে ভোট শুরু প্রক্রিয়া চলতেছে। ভোট চুরি অলরেডি বাংলাদেশের চলছে।
বাংলাদেশে নিয়ে আমেরিকার এমন সিদ্ধান্তে সরকার উদ্বিগ্ন নয়, ক্ষমতাসীন দের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে খসরু বলেন, ভালো কথা। আইনের শাসন, বাক স্বাধীনতা, ভোটার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। উদ্বিগ্ন হতে হবে, উদ্বিগ্ন নয় বললে তো আর হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
Leave a Reply