1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১১:১২ অপরাহ্ন

টেকনাফে মুক্তিপণ নিয়েও অপহৃত যুবককে ফেরত দেয়নি অপহরণকারীরা

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩
  • ৫৬ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: ওমর ফারুক (২০) প্রকাশ ফয়সালকে গত সোমবার ১৭ রমজানে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাহাড়ি দুর্বৃত্তরা । পরে পরিবারের কাছে মুঠোফোনে ২৫ লাখ টাকা মুক্তপণ দাবি করে আসছিল অপহরণ চক্রের সদস্যরা।

২৪ রমজান ধারদেনা করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপন দেয়ার পরও ওমর ফারুককে ফেরত দেয়নি অপহরণকারীরা। টাকা পাওয়ার পরপরই মুঠোফোন বন্ধ করে রাখে অপহরণকারীরা। এরপর থেকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি ভুক্তভোগী ওমর ফারুকের পরিবার। অপহৃত যুবক ওমর ফারুক পেশায় একজন অটোরিকশা (টমটম) চালক। তিনি এখন বেঁচে আছেন নাকি দুর্বৃত্তরা মেরেই ফেলছে কেউ জানে না। ছেলে হারানো ফারুকের মায়ের কান্নার আহাজারিতেই পুরো পরিবারের এখন ভবঘুরে অবস্থা।

অপহৃত টমটম চালক ওমর ফারুক কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ছোট হাবিব পাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে।

শুধু ওমর ফারুক নয়, এভাবে অনেকে অপহরণের শিকার হয়ে হয়তো মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসছে নতুবা লাশ ফেরত পাচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনে অসহ্য হয়ে উখিয়া-টেকনাফের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে টেকনাফে শুরু হয়েছে অপহরণের ঘটনা। প্রথমদিকে অপহরণের ঘটনা তেমন চোখে পড়ার মতো না হলেও এখন প্রতিনিয়ত ঘটছে। এ যেন রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীদের বিনা পুঁজির ব্যবসা। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে অস্ত্রেরমুখে তুলে নিয়ে পরে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করছে। এভাবেই অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মানুষ অপহরণ করে মুক্তিপণের নামে বিনাপুঁজির ব্যবসা করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

গত সাত মাসে টেকনাফে অপহরণের ঘটনা চোখেপড়ার মতো। এসব অপহরণ বাণিজ্য সচেতন মহলের বিবেককে ভাবিয়ে তুলছে। টেকনাফের সকল পেশার মানুষ এখন আতঙ্কে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে খেটে-খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো খুবই আতংকে তাদের কর্মস্থলে যাচ্ছেন।

ধারাবাহিক অপহরণের করে মুক্তিপণের মতো এমন জঘন্য অপরাধগুলো কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

স্থানীয় সংবাদকর্মী ও কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক জাহেদ হেসেন বলেন, টেকনাফের আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ অবনতি হয়েছে। এ পর্যন্ত অপহৃত যত ভিকটিম ফিরে এসেছে কেউ খালি হাতে আসেনি, সবাই টাকা দিয়েই ফিরে এসেছে। ফিরে আসার পরে প্রশাসন উদ্ধারের নামে নাটক সাজায় এবং আমাদের মতো কিছু গণমাধ্যম কর্মীরাই সেগুলো প্রচার করে। এখানে জনপ্রতিনিধিরাও ব্যর্থ, তাঁদের ভূমিকাও দেখছি না। অনেক সময় প্রশাসন এসব ঘটনা ইয়াবার লেনদেনের কারণে হয় বলে দাবি করে থাকে, তাহলে সেসব ইয়াবা কারবারিদের প্রশাসন আগে আটক করে না কেন? এমন প্রশ্নও তুলেন তিনি।

জানা গেছে, গত ৭ মাসে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রায় ৭২ জন অপহরণ হয়েছে। এরইমধ্যে রোহিঙ্গা রয়েছে ৪০ জন। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে অপহৃত হয়েছে ৭ জন। এরইমধ্যে দু’জন ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে।

টেকনাফের সচেতন নাগরিক কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রভাষক এহ্সান উদ্দিন বলেন, অপহরণ নিয়ন্ত্রণে প্রধানত ব্যর্থ হচ্ছে প্রশাসন, প্রশাসনের কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেই, যা করছে সেগুলো পর্যাপ্ত না। যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিতপ্রতিনিধি তাঁদেরও তেমন ভূমিকা দেখছি না, এবং রাজনৈতিক নেতাদেরও ব্যর্থটা আছে বলে মনে করছি। যেখানে জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিরব সেখানে সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।

অপহৃত যুবক ওমর ফারুকের মামা নুর কালাম বলেন, আমার ভাগিনাকে অপহরণ করে ০১৫৩৮২৮২০৯৭ নং থেকে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবিকরে আসছিল দুর্বৃত্তরা।

অপহরণের ৭ দিনের মাথায়, শেষমেশ ৩ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য আমরা রাজি হয়েছি। ১৮ মে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আমি হ্নীলা পানখালি ঢালাই গিয়ে ডাকাতদলের দেখানো জায়গায় টাকা গুলো রেখে আসি। দূর থেকে ডাকাত দল পাহাড় থেকে চেয়ে থাকছিল টাকা রাখছি কিনা। টাকা রাখার পরে ওই নং থেকে ফোন করে বলে দেয়,হ্নীলা বাজারে অপেক্ষা করতে । আমার ভাগিনাও আমাকে বলে মামা আমি আসতেছি আমার জন্য বাজারে অপেক্ষা করো। কিন্তু অপেক্ষা করতে করতে রাত পার হয়ে গেলেও এখনো ফিরে আসেনি। টাকা দেওয়ার পর থেকে আর যোগাযোগ করতে পাচ্ছিনা,ফোন নাম্বারটাও বন্ধ রেখেছে।

সাবেক ইউপি সদস্য হামজালাল বলেন, ফাইসাল অপহরণ হয়েছে সেটা আমি শুনেছি। সে টমটম চালিয়ে পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে।প্রশাসন আরো একটু কঠোর হলে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।

অপহৃত ওমর ফারুক ফায়সালের মা নিজের ছেলেকে ফেরত পেতে প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল হালিম জানান, ওমর ফারুকের ঘটনাটি ইয়াবা সংক্রান্ত লেনদেনের কারণে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত অপহরণের ঘটনায় আমরা দ্রুত একশনে যাই,সর্বোচ্চ রেসফন্স করি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। এমনকি রমজানে ঠিকভাবে ইফতারও করতে পারেননি বলেও জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews