জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: রবিবার রাতে মুন্সিগঞ্জ থেকে ট্রাকচালক আহাদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব, ইনসেটে নিহত সাংবাদিক মিলনের ছবি।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কোটবাজালিয়া বাজার এলাকায় বেপরোয়া গতিতে চলমান ডাম্প ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে সাংবাদিক মঞ্জুর হোসেন মিলন নিহত হওয়ার ঘটনায় ঘাতক ট্রাকচালক আহাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রবিবার রাতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ৪ আগস্ট সকাল ৯টায় গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কোটবাজালিয়া বাজারে বেপরোয়া গতির বালুবোঝাই একটি ড্রাম্প ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো ট-১৭-১০৮১) চাপায় সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুর হোসেন মিলন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে পরের দিন কাপাসিয়া থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০। এই দুর্ঘটনার পর ঘাতক চালককে গ্রেপ্তারে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়।
কমান্ডার মঈন বলেন, র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এবং র্যাব-১০ এর একটি দল মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় জড়িত ঘাতক ট্রাক চালক আহাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাব জানতে পেরেছে, আহাদ বালু ভর্তি ড্রাম ট্রাক নিয়ে কাপাসিয়া থেকে চাঁদপুর যাচ্ছিল। ট্রাকটিতে অতিরিক্ত ওজনের বালু বোঝাই থাকা সত্ত্বেও তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর জন্য বেপরোয়া গতিতে গাড়িটি চালাতে থাকে। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কোটবাজালিয়া বাজারে পৌঁছালে মোটরসাইকেল যোগে সংবাদ সংগ্রহের কাজে কাপাসিয়া যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে ভিকটিমকে বেপরোয়া গতির ডাম ট্রাকটি চাপা দিলে ভিকটিম ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। দুর্ঘটনার পর ঘাতক ট্রাকচালক ঘটনাস্থলে ট্রাকটি ফেলে পালিয়ে যায়।
র্যাব জানায়, ঘাতক চালক আহাদ সাত বছর ধরে মাহিন্দ্রা, পিকআপসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালিয়ে আসছিল। তার মাঝারি যানবাহন চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও ভারী যানবাহন চালানোর কোনো বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এছাড়াও ট্রাকটির ধারণ ক্ষমতা ৮ টন থাকা সত্ত্বেও সে আনুমানিক ১৪ টন ওজনের বালু বোঝাই করে গাড়িটি চালিয়ে আসছিল। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে কোর্টবাজারে আসে এবং অটোযোগে কালিগঞ্জে চলে যায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে তার বাড়ি পৌঁছায় এবং দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে জানতে পারলে গ্রেপ্তার এড়াতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। সেখান থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঈন জানান, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স যেটা ছিল সেটা দিয়ে এই ট্রাক চালানোর কথা না। আর এগুলো দেখভাল করা যাদের দায়িত্ব তারা সেটা পালন করেননি। এর আগেও একটি বাস দুর্ঘটনায় যে ড্রাইভারকে আটক করা হয়েছিল তার ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না।
তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে ট্রাকের মালিকের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা। যদি মালিককে আইনের আওতায় আনতে হয় তবে সেটা তিনি করবেন।
Leave a Reply