1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন

অন্যায়ভাবে ভাঙাচোরা অস্ত্র’ দিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়: সাবেক কাউন্সিলর মিজান

  • Update Time : রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩
  • ৬৪ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান বলেছেন, ভাই হত্যার বিচার চাওয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ ও তার ভাই হারিস আহমদ প্রভাবশালীদের ইন্ধন দিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল। আমার তো অত্যাধুনিক লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এরপরও আমার কেন ভাঙাচোরা অস্ত্র লাগবে? কিন্তু আমার বিরুদ্ধে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা না পেলেও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়।

রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে হাবিবুর রহমান মিজান এসব জানান। এ সময় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবও সংবাদ সম্মেলন করেন।

সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ৭ মে ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই হত্যা মামলায় আদালত আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফের বিরুদ্ধে ফাঁসি ও জোসেফের ভাই হারিস আহমদ ও আনিস আহমদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ভাই হত্যার বিচার চাওয়ায় আমার জন্য কাল হয়েছিল। প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে আমাকে ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ আমার বিরুদ্ধে একটা মামলাও ছিল না। আমি মুক্তি পেলেও এখনো নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছি। ভাবতেই পারছি না আপনাদের সামনে দাঁড়াতে পারবো।’

মিজান বলেন, ‘আমার তো অত্যাধুনিক লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এরপরও আমার কেন ভাঙ্গাচুরা অস্ত্র লাগবে? কিন্তু র‌্যাব আমার বিরুদ্ধে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা না পেলেও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে।’ সাবেক এই কাউন্সিলের দাবি- প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে অস্ত্র উদ্ধারও দেখানো হলেও আমার বাসা থেকে দলিলপত্র, টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হলেও জব্দ তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি।’

হাবিবুর রহমান মিজান বলেন, ‘আমি ফ্রিডম মিজান নই। ফ্রিডম মিজান সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আমি হাবিবুর রহমান মিজান মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। আমি বঙ্গবন্ধুর একজন অনুগত কর্মী।’

লিখিত বক্তব্যে যা বলেছেন মিজান:

লিখিত বক্তব্যে মিজান দাবি করেন, ১৯৯৬ সালের ৭ মে মোহাম্মদপুরে আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার জজ আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে জোসেফ আপিল করলেও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগ এ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সেই মামলায় আরও আসামী ছিলেন জোসেফের ভাই হারিস আহমদ ও আনিস আহমদ। যারাও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। হারিস ও আনিস রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পেয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এমনকি সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তাদের কারাগারে যেতে হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে এখনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ আছে।

তিনি আরও দাবি করেন, আমার ভাই খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান ২০১৮ সালের মে মাসে। বড় ভাই হারিস আহমেদের হাত ধরে রাজনীতির মাঠে আসেন জোসেফ। এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতেন হারিস। নব্বই দশকে জাতীয় পার্টি ছেড়ে হারিস দলবদল করেন। বড় ভাইয়ের ক্যাডার বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বপালন করতেন জোসেফ। ওই সময় মোহাম্মদপুর হাজারীবাগসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন জোসেফ। যোগ দেন আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আলোচিত সেভেন স্টার গ্রুপে। জোসেফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এখনো চলছে।

২০১৯ সালে পরিবর্তিত এক পরিস্থিতিতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় আমাকে আটক করা হয়। যদিও এর আগে আমার নামে কোনো থানায় কখনো কোনো মামলা ছিল না। ওই সময় আমার বিরুদ্ধে সাজানো সব অভিযোগ আনা হয়। এমনকি আমার নামও বদলে দেয়া হয়। আমার নাম দেয়া হয় মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। অথচ আমার নাম হাবিবুর রহমান মিজান। সরকারের ওই অভিযান ছিলো ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। অথচ এ ধরণের কোনো কর্মকান্ডে আমি সম্পৃক্ত না থাকলেও সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রভাবশালীর নাম জানতে চাওয়া হলেও তিনি তা উল্লেখ না করে বলেন, ‘একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সরাসরি ইন্ধনে ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ হারিস- আনিসের মদদে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

ফ্রিডম পার্টির মিজান কারাগারে:

নিজে ফ্রিডম পার্টির মিজান নন দাবি করে তিনি বলেন, যে ফ্রিডম মিজানুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তার নামে আমার পরিচয় দেয়া হয়। ওই সময়ের বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারবো না। আমাকে গ্রেপ্তারের মূল কারণ ছিল-সন্ত্রাসী জোসেফ গংরা মোহাম্মদপুর এলাকায় আবারও তাদের পুরনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করা। অথচ আমার ভাই হত্যায় তার ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনায় জোসেফ অঙ্গীকার করেছিল সে ভালো হয়ে গেছে, আর কোনোদিন কোনো খারাপ কাজ করবে না। বাস্তবে তার প্রমাণ পাওয়া যায় না। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা তার এক আপনজনের সরাসরি সহযোগীতায় আমার ওপর ও ধরণের নৃসংশতা চালায় তারা।

স্ত্রী-মায়ের মৃত্যু হলেও তাদের চেহারা দেখতে পারিনি:

সাজানো ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় দাবি করে মিজান বলেন, ২০২০ সালে আমার প্রিয়তম স্ত্রী মনি রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। আমি তার মরা মুখটাও দেখতে পারিনি। আমার মা মারা যান। বড় বোনের জামাই ও অনেক আপনজন মারা গেলেও তাদের ধর্মীয় বিদায়ে আমি অংশ নিতে পারি নাই। যা এক ভয়ংকর দুঃসময় ছিল আমার জন্য। যে ভয়ংকর সময় আমি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। আমার মাথার ওপর এখনো ঝুলছে কথিত অর্থপাচার এবং অবৈধ অস্ত্র মামলা। যার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না।

মামলা থেকে প্রতিকার চান:

মিথ্যা মামলায় হয়রানির প্রতিকার দাবি করে সাবেক এ প্রভাবশালী কাউন্সিলর বলেন, তিন বছরের বেশি কারাভোগের পর ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর মুক্তি পাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছি। এটাই আমার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ ও তার প্রভাবশালী শক্তি আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমার সাজানো গোছানো জীবনটা তছনছ করে দিয়েছে। আমি অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর গ্রেপ্তার দাবি করছি।

যা বললেন রাজীব:

সাবেক কাউন্সিলর রাজীব বলেছেন, একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার ভাই জোসেফ-হারিস-আনিসের কারণে বিনা অপরাধে আমাকে তিন বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকতে হয়েছে। তিনি দাবি করেন, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর প্রভাবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের (জোসেফ-হারিস-আনিস) উদ্দেশ্য ছিল ভাতিজাকে কাউন্সিলর বানাবে; আর সেটা করেছেনও।

সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীব বলেন, ‘আপনারা বিজ্ঞ মানুষ, আপনারা কথাগুলো বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমরা দুই জন কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় তারা আমাদের জীবনের গতি পাল্টে দিয়েছে। তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও তার নাম প্রকাশ করতে পারছি না। আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews