জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলকে আরো শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগ নেতাদের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতাকর্মীদের যেকোনো ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। অনেকেই এমন গতিতে একটি দেশের অগ্রগতি চায় না। তাই, তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।’

আওয়ামী লীগের সারা দেশের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা বুধবার গণভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সরকারের কঠোর পরিশ্রমের কারণে দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি-দরিদ্রের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।’

‘দ্রুততম সময়ে দারিদ্র্যের হার আরও দুই বা তিন শতাংশ কমিয়ে আনতে সরকারের প্রচেষ্টাকে আরও গতিশীল করবে। বাংলাদেশে কোনো অতি-দারিদ্র থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিনা খরচে বাড়ি প্রদান, স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং দেশবাসীর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ সবকিছুই করছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।’

জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করে জনগণের কল্যাণে আরও সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেছেন উল্লেখ করে দলীয় নেতা কর্মীদের শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাই আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। কারণ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে গঠিত হয়েছিল। তারা মাটি ও মানুষের দল নয়।’

গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাসস্থানের মতো প্রতিটি খাতে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে।’

পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পেলেও বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতা ও তাদের সমমনাদের কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘তারা কোনো উন্নয়ন দেখছে না। তারা প্রতিদিনই এমন কি রমজানের দিনেও উচ্চকণ্ঠে মিথ্যা কথা বলছে। কেন তারা এমন করছে—আমি তা বুঝতে পারছি না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের জন্য কাজ করেছে। আর এ কারণেই জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোনো ভোট কারচুপির প্রয়োজন নেই। কারণ তারা সবসময় জনগণের সেবা করে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ কখনোই ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আসে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচনের কথা বলছে, তারা বন্দুকের মুখে ক্ষমতায় এসেছে। তাই, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। এ নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ২৯ আসন।’

‘বিএনপি এখনও তাদের আগের অবস্থানে অটল রয়েছে। অথচ দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে আওয়ামী লীগ তার অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে বাবা-মা, ভাইসহ সর্বস্ব হারানোর পর দেশবাসীকে নিজের কাছের মানুষ ভেবে তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। আমি যা কিছু করেছি-তা মানুষের জন্য করেছি।’

সবকিছু হারিয়ে দেশে ফিরে আসার পর আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারাআমার পাশে থাকলে আমি জনগণের জন্য কাজ করতে পারবো।’