1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন

স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

  • Update Time : সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১০৫ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসক এবং নার্সদের অবহেলার কারণে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে শিশুটির পরিবার। মৃত শিশুর নাম এমিলিয়া মঞ্জুর রাজ চৌধুরী। সে রাজধানীর হলিক্রস স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো। সোমবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির মা চৌধুরী নুরজাহান মঞ্জুর সেতুর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

নুরজাহান রেডিও আমারের প্রতিবেদক ছিলেন। আর বাবা পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী। তিনি নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং কলেজের উপঅধিনায়ক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এমিলিয়ার পরিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হলের সরকারি পুলিশ কোয়ার্টারে বসবাস করেন।

এমিলিয়ার মা চৌধুরী নুরজাহান বলেন, গত পরশু (শনিবার) আমরা ঢাকা মেডিকেল থেকে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসি। তখন ওরা আইসিইউতে দেয়। ওর প্রধানত সমস্যা স্টমাক ব্লক ছিল। ও কিছু খেতে পারছিল না। হজম হচ্ছিল না। এই কারণে ওর পেট ব্যাথা ও বমি হচ্ছিল। পরে ঢাকা মেডিকেল থেকে এখানে এনেছি। আনার পরে ওকে এখানে ভর্তি করল। ভর্তি করার পর এখানকার চিকিৎসকেরা জানালেন ওর সব জায়গায় ইনফেকশন ছড়িয়ে গেছে। ওর ব্লাডে ইনফেকশন ছড়িয়ে গেছে। ব্লাডে ইনফেকশন বেশি বাড়ার কারণে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই দুই কারণে ওর এত জ্বর উঠল যে ও ট্রমায় চলে গেলো।

নুরজাহান বলেন, ‘ওনাদের এখানে (স্কয়ার হাসপাতাল) আনলাম। ওনারা বলল বাচ্চার অবস্থা এত ক্রিটিক্যাল আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। রবিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বাচ্চাকে আমাদেরকে দেখতে দেয় নাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আমি কতোবার নার্সদেরকে বললাম যদি আমাদের দেখতে না দেন তাহলে ওর অবস্থা জেনে আমাদেরকে জানান, যে বাচ্চটার কী অবস্থা। কিন্তু ওরা তাও দেয়নি।

নুরজাহানের ভাষ্য, পরে আমি খুঁজে খুঁজে ওদের প্রশাসনের একজনকে খুঁজে বের করে নিয়েছি। তার মাধ্যমে আমি ঢুকছি। ঢুকে দেখি আমার বাচ্চাটা কান্না করতেছে, আমার মাকে এনে দাও, আমি আমার মার কাছে যাবো। আর নার্সগুলো ঘোরাফেরা করছে। কোনো আওয়াজ দিচ্ছে না। পরে আমি বাচ্চার সঙ্গে কথা বললাম। কথা বলার পরে রাতের বেলায় ডাক্তারা আমাকে ব্রিফিং দিল, আপনার বাচ্চার ইনফেকশনটা সারলেই আমরা সবকিছু করে দিতে পারি। কোনো সমস্যা নাই। তখন আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ভাই ভরসা আছে তো? তাহলে আপনারা কাজ করতে থাকেন। তখন ডাক্তার আমাকে বলেন, ভরসা না থাকলে তো আপনাদেরকে বলতাম না। তাহলে তো বলতাম বাচ্চা নিয়ে যান।

‘পরে রাতের বেলায় ওর শরীর অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এটা ওনারা আমাদেরকে বলে নাই। সকাল বেলা যখন আমি বাচ্চাকে দেখতে গিয়েছি, দেখি ও ট্রমায় চলে গেছে। ও আমাকে দেখে আমাকে চিনতে পারতেছে না। আমাকে বলতেছে সিসটার আমার মাকে একটু এনে দিবা। এবং আমার বাচ্চার আশেপাশে কোনো নার্স ছিল না। ওর নাকে নল ছিল হাতে ক্যানোলা ছিল না। স্যালাইন ছিল না। ও এমনিতেই পড়ে আছে। বাচ্চা ওই অবস্থায় খালি বলছে, আমার মাকে এনে দাও, আমার মাকে এনে দাও। ’ বলেন নুরজাহান।

‘তারপরে আমরা বলার পরে ডাক্তাররা দেখতে গিয়েছে। তখন ডাক্তারদের ওর বাবা বলল, আপনাদের যদি সমস্যা হয় তাহলে আমাদেরকে বলেন, আমরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ওকে বাইরে নিয়ে যাই। তখন ডাক্তার বলল ঠিক আছে আমরা তাহলে প্রসেস করতেছি। কেস সামারি রেডি করছিল। কিন্তু ওই কেস সামারি দেওয়ার আগেই বাচ্চার অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়। রাতের বেলায় যেহেতু তারা ট্রিটমেন্ট করে নাই। ওর অবস্থা এত খারাপ হয়ে যায়, যে আমাদেরকে কিছু না বলে রোগীকে লাইফ সাপোর্টে দিয়েছে। বাচ্চাকে গুতাগুতি যত অত্যাচার আছে সব করেছে। ওর চেহারাটা দেখলে বোঝা যাবে।’ বলেন শিশুটির মা।

নুরজাহান বলেন, ‘প্রায় দুই ঘণ্টা পরে আমাকে জানাচ্ছে, যে আপনার বাচ্চা ইজ নো মোর। তখন আমি বললাম, এই যে নার্সরা যে ডাকল না। বাচ্চাটা তো শারীরিক থেকে মানসিকভাবে বেশি দুর্বল ছিল। মাকে যে ডাকলেন না, আপনারা এটার জবাব দেন। কিন্তু তারা আমাকে কোনো জবাব দিতে পারে নাই। দুপুর ১২টার সময় ঘোষণা দিয়ে বলেন, বাচ্চা আর নাই। আপনারা নিয়ে যান বাচ্চা। ওদের অনেক গাফিলতি ছিল। ডাক্তার কাদেরের তত্ত্বাবধানে ছিল রোগী, কিন্তু সেই ডাক্তার রোগীর কাছে ছিলেন না। নার্সরাও রোগীর আশেপাশে কেউ ছিলেন না।’

এ ব্যাপারে স্কয়ার হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী মো. ইউসুফ বলেন, ‘বাচ্চার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। আমাদের ডাক্তাররা খুব চেষ্টা করেছেন। ওনাদের কোনো গাফিলতি নেই। আর বাচ্চাটি ছিল আইসিইউতে। সেখানে আরো ৩০টির মতো রোগী আছে। তার মা খুব চিৎকার চেঁচামেচি করছিলেন। ফলে তাকে আমরা অন্য রোগীদের কথা চিন্তা করে আইসিইউতে রাখার অনুমতি দেয়নি। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডিআইজি, অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার কর্মকর্তারা ছিলেন। ওনারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। ওনারাই তাদেরকে (শিশুর স্বজনদের) শান্তনা দিয়ে নিয়ে গেছেন।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews