জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে সাড়া জাগানো তুর্কি আন-ম্যানড ভেহিক্যাল (ড্রোন) বায়রাক্তার টিবি-টু।
এই ড্রোনে লাগানো আছে উন্নত প্রযুক্তির ইলেকট্রো-অপটিক্যাল ক্যামেরা এবং বহন করা যাবে লেজার-নিয়ন্ত্রিত বোমাও। উড়ে গিয়ে নির্ভুল নিশানায় লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে এ ড্রোন।
বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগানো তুর্কি এ সামরিকযান সম্প্রতি আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া যুদ্ধে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। যুদ্ধে এই ড্রোন ব্যবহারে আজারবাইজান বিশেষ সফলতা পায়।
সোমবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উন্নত প্রযুক্তির এ ড্রোন সেনাবহরে যুক্ত হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
এ সময় সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কারও সঙ্গে যুদ্ধ বা বৈরিতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এই পররাষ্ট্র নীতিতে চলা বাংলাদেশ বর্হিশত্রুর আক্রমণ এলে যাতে পিছিয়ে না থাকে। সেই প্রস্তুতি হিসেবেই এ ধরনের প্রযুক্তি সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এর বাইরে দেশের ভেতরে যেকোনো ধরনের সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমেও ব্যবহার করা যাবে এই ড্রোন।’
এ ধরনের সামরিকযান অর্ন্তভুক্তিকরণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অপারেশন পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা যায়, ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে তুরস্ক থেকে এ যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিতে এ প্রযুক্তি ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আকাশে উড়তে থাকা বায়রাক্তার টিবি-টু ড্রোনটি আকারে ছোট একটি উড়োজাহাজের সমান। চারটি লেজার গাইডেড স্মার্ট রকেট সংযুক্ত করে লক্ষ্যবস্তুতে অনায়াসে আঘাত করতে পারে এ বিশেষ ড্রোন। পাশাপাশি ড্রোনটি সর্বোচ্চ সাত শ কেজি ওজন নিয়ে ঘণ্টায় ১২৯ কিলোমিটার থেকে শুরু করে ২২২ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম।
এতে জ্বালানি ধারণা ক্ষমতা ৩০০ লিটার। এই ড্রোন ১৮ হাজার ফিট উচ্চতায় থেকে কার্যক্রম চালাতে পারে। এছাড়া বেজ স্টেশন থেকে তিন শ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ড্রোনটি চালানো যায়।
বিশেষ এ ড্রোন কমিশনিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ছুঁয়েছে অন্যরকম মাইফলক। বায়রাক্তার টিবি-টু ড্রোনটিকে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং সেনাবাহিনীর অভিযান কার্যক্রমকে স্মার্ট করার প্রচেষ্টা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এর আগে, সকালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। এবার ৮৫তম দীর্ঘমেয়াদি এবং ৫৮তম স্পেশাল কোর্সে মোট ২৬০জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করে।
অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, অসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ, বিদেশি কূটনৈতিক এবং স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply