জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে অনেক টাকা খরচ হয়। তাই পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরও সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, দেশের মানুষের জন্য সব ধরনের উন্নয়নে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমাদের লক্ষ্যই হলো দেশকে আরও উন্নত করা। এজন্য নানা উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আর বিএনপি নিয়েছে ধ্বংস করার কর্মসূচি।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন শেষে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে ভাঙ্গায় আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, এক ইঞ্চি জমি যে খালি না থাকে। যার যতটুকু জমি আছে তাতেই চাষ করে ফসল ফলান। যা পারেন উৎপাদন করেন। নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে হবে। আমার যত অনাবাদি জমি আছে, তাতে চাষ করা শুরু করেছি। গণভবন এখন একটা খামার হয়ে গেছে। গণভবনে আমি সবজি, মরিচ, পেঁয়াজসহ যা যা পারি সব উৎপাদন করছি। উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়িয়ে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিজেদেরকে ঠিক করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। একজন ব্যক্তি একটা ব্যাংকের এমডি থাকতে পারবে না, বলেছিলাম। যদিও তিনি জগৎ বিখ্যাত। তার কারণে হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাংককে বলেছিলাম, নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করবো, সেটা আমরা করেছি।
বিএনপির ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। কেউ বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না। বিএনপি উন্নয়ন করতে না পারলেও ধ্বংসাত্মক রাজনীতির করতে পারে। আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরও উন্নত করা। এজন্য নানা উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। আর বিএনপি ধ্বংস নিয়েই আছে। তারা রেল উপড়ে ফেলা, বাসে আগুন, মানুষের জান-মাল ধ্বংস করেছে। তারা এ ধ্বংসের মধ্যেই থাকবে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপির দল হলো লুটেদের দল। তাদের দলের নেত্রী এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করায় এবং দুর্নীতি করায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বিএনপির আরেক নেতা পলাতক আসামি। রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশে ছেড়েছে। অর্থ আত্মসাৎ করা, অস্ত্র চোরাকারবারি করা এই হলো বিএনপির নেতা।
শেখ হাসিনা বলেন, জামায়াতে ইসলামী হচ্ছে যুদ্ধ অপরাধী। যুদ্ধে অপরাধের জন্য শাস্তি হয়েছে। এরা দেশকে ধ্বংস করে দেবে। তাদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য একমাত্র নৌকা মার্কাই দেশের মানুষদের সহযোগিতা করে। এ সময় তিনি নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়া আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো সেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। সেই কাজ করে যাচ্ছি। এসব কাজে আমাদের নেতাকর্মীরাও সহযোগিতা করেছে। নৌকা মার্কা যেমন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, তেমনি নৌকায় ভোট দেয়ায় দেশ উন্নত হয়েছে, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।’
‘আমি জানি অনেক জ্ঞানীগুণী আমার সঙ্গে নেই। কিন্তু দেশের মানুষ আমার সঙ্গে আছে। এদেশকে নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমার সঙ্গে দেশের মুক্তিযোদ্ধারা আছেন, যারা বুকের তাজা রক্তা দিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন।’
বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরও সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে অনেক টাকা খরচ হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারে আমাদের আরও সাশ্রয়ী হতে হবে। পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। দেশের মানুষের সব ধরনের উন্নয়নের জন্য আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়ে, শিক্ষার্থীদের বলব, আমরা বিনা পয়সায় বই দেই, আমরা বৃত্তি দেই, সবাইকে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। প্রত্যেক এলাকায় স্কুল উন্নত করে দিচ্ছে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। এখন সামনে আমাদের লক্ষ্য ২০২৬ সাল থেকে সেটা কার্যকর হবে। দিনরাত পরিশ্রম করে এ দেশের উন্নতি করেছি। এ কারণে গ্রামেও কাঁচা রাস্তাঘাট খুব কম আছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। এছাড়া জনসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নেন।
Leave a Reply