স্টাফ রিপোর্টার : রাঙ্গামাটি বন বিভাগের ফরেস্ট অফিসার পরিচয়ে গাজীপুরের জাহাঙ্গীর আলম বহুমুখী প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধ শতাধিক লোকের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা ভূয়া ফরেস্টার জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।
অভিযোগ ও ডায়েরির সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটির বন বিভাগের ফরেস্ট অফিসার পরিচয় দিয়ে ফার্নিচার, সেগুন কাঠ, চাকুরী ও তক্ষক দেওয়ার নামে অর্ধ শতাধিক লোকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। সে রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজারের হোটেল হিল সিটিতে দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ অবস্থান করে ভয়ংকর একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের প্রধান হিসেবে অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে আসছে। রিজার্ভ বাজারের স্থানীয়রা জানান, রাঙ্গামাটির পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আমির ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিনের ছত্রছায়ায় দেদারছে অপকর্ম করে হাতিয়ে নেয়া অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে থাকেন। তার বহুমুখী প্রতারণার সাথে চিটাগাং এর আলমগীর হোসেন, গাজীপুরে শহীদ, মোহাম্মদপুরে সোহেলও সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এ ছাড়া রাংগামাটিতে এদের ভূয়া ডিবি অফিসার ও নেতা পরিচয়ে ৭/৮ সদস্যের একটি সংগবদ্ধ চক্র রয়েছে।
মতিঝিলের আলমগীর কবিরের নিকট থেকে উন্নত মানের সেগুন কাঠের ফার্নিচার দেওয়ার কথা বলে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে ১ লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা, পাবনার সেলিমের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার, সাভারের শফিকের কাছ থেকে সেগুন কাঠ দেওয়ার নাম করে ৩ লক্ষ পঁচিশ হাজার, যশোরের আকবর আলী (অবসর আর্মি)’র নিকট থেকে ১০ লক্ষ টাকা, গাজীপুরের মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে জমি রেজিস্ট্রি করার কথা বলে ২ লক্ষ টাকা, পাবনার আব্দুল মতিন এর কাছ থেকে ছেলেকে চাকুরির দেয়ার কথা বলে ৫ লক্ষ টাকা, শেরপুরের আতা মিয়ার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা নিয়ে মোবাইল বন্ধ করে প্রতারণা করেছে। এছাড়া সহজে কোটি টাকার মালিক হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তক্ষক দেওয়ার নামে বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সেই টাকায় জাহাঙ্গীর ৪টি বাস, ২টি ট্রাক ও কোটি টাকা সম্পত্তি ক্রয় করেছে। অনেকেই লোক লজ্জার ভয়ে এতদিন মুখ খুঁলতে রাজি হয়নি। জাহাঙ্গীরের অসংখ্য মোবাইল সিম কার্ড থাকলেও তার নামে একটিও রেজিস্ট্রি করা নেই। তাছাড়া সুচতুর প্রতারক জাহাঙ্গীর কাউকেই তার বাসা বা বাড়ির সঠিক ঠিকানা দেইনি।
শেরপুরের আতা মিয়া জানান, আমার পাওনা টাকা চাইতে রাঙ্গামাটি গেলে জাহাঙ্গীর আমাকে আটকিয়ে ভূয়া এক ডিবি ও এক নেতাকে ডেকে এনে মারপিট করে। এবং তক্ষক দিয়ে চালান দেওয়ার ভয় দেখায়। তাছাড়া পুনরায় টাকা চাইলে তার এসপি মামাকে দিয়ে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেয়।
সাভারের শফিক জানান, আমার বন্ধু সাভারের সোহেলকে তক্ষকের প্রলোভন দিয়ে রাঙ্গামাটি নেয়। সেখানে জাহাঙ্গীর সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে হোটেল থেকে এক লক্ষ টাকা কেড়ে নেয়। ভয়ংকর প্রতারকের এহেন কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন প্রশাসনের কাছে পাওনা টাকা ফেরতসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লোকজন বিভিন্ন থানায় প্রতারক জাহাঙ্গীরের নামে অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছেন।
Leave a Reply