জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে জ্বালাও- পোড়াও ও প্রাণহানির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা মানুষ মারার রাজনীতি করে, মানুষ মারার পরিকল্পনা করে তারা দেশের মানুষকে কোন গণতন্ত্র দেবে।
তিনি বলেন, হত্যাকারীরা দেশের মানুষকে কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না। যারা বাসে, রেললাইনে আগুন দেয় তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসর। বিএনপি মানুষ মারার রাজনীতি করে বলেই জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটা নির্বাচনের আগেই ষড়যন্ত্র হয়। আমাদের শক্তি হলো মানুষ। জনগণের শক্তিতে আমরা টানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। যার ফলে আজকে বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে। মাত্র তো ১৫ বছর একটানা সময় পেলাম। ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩, বাংলাদেশ আজকে একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, যে বাংলাদেশকে পাকিস্তানির মনে করেছিল বোঝা, এটা চলে গেলেই ভালো। আজকে তারাই বলে, আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আমরা বাংলাদেশের মতো উন্নত হতে চাই। আর যারা বলেছিল তলাবিহীন ঝুড়ি তারা দেখেছে যে, বাংলাদেশ-বাঙালিকে দাবায়ে রাখা যায় না যেটা জাতির পিতা বলেছিলেন। আজকে তাদের চক্রান্ত শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটা নির্বাচনের আগেই চক্রান্ত হয়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এ দেশের মানুষের শক্তিই বড় শক্তি। আর সেই শক্তি আমাদের সঙ্গে আছে বলেই পর পর আমরা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, পাকিস্তানিদের সঙ্গে মিলে যুদ্ধাপরাধীরা দেশের মানুষকে হত্যা করে। আর এখন বিএনপি-জামায়াত যারা জ্বালাও-পোড়াও করে; তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসর।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, যারা রেল লাইনের স্লিপার তুলে ফেলে, এরা তো পরাজিত শক্তির দালাল। পরাজিত শক্তির দোসর। এদের না বলুন। এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নাই। খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশে কোনো স্থান নাই।
‘বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তারা ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। শান্তিতে বাস করবে, উন্নত জীবন পাবে— সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’ মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার যে যুদ্ধ; এটা গেরিলাযুদ্ধ, জনযুদ্ধ ছিল। নারীরাও বিভিন্নভাবে যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে দেশের গণতন্ত্র ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিল। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করে তখন আমারা দুই বোন বিদেশে ছিলাম। তাতে আল্লাহর রহমতে আমরা বেঁচে যাই। আমি বিদেশে থাকতেই আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়। এরপরে আমি দেশে এসে বাংলাদেশের গণতন্ত্র উদ্ধার করি।
বিএনপি ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছিলাম গ্যাস পাবে না। আল্লাহতায়ালাও যখন সম্পদ দেয়, মানুষ বুঝে দেয়। সেই গ্যাস দিতে পারেনি। কূপ খনন করে দেখে গ্যাস নাই।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে, কর্নেল রশিদ ও হুদাকে ভোট চুরি করে ক্ষমতা বসালো। পার্লামেন্টে বিরোধী দলের নেতার আসন দিলো। ফারুককেও চেষ্টা করেছিল নওগাঁ থেকে জিতিয়ে আনতে, পারেনি। খালেদা ঘোষণা দিলেন তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বেশি দিন বসতে পারেনি, ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন, ৩০ মার্চ জনগণের তোপের মুখে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করে বিদায় নিয়েছিল। খালেদা জিয়াকে ভোট চুরির অপরাধে বিদায় নিতে হয়েছিল। এক বার নয়, দুই বার বিদায় নিতে হয়েছিল।
Leave a Reply