অনলাইন ডেস্ক : শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে প্রায়ই হাসপাতালে যেতে হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে। চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। গত পহেলা মে তাকে সর্বশেষ রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি একদিনের জন্য ভর্তিও থাকেন। এর আগে ৩০ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। বোর্ডের সদস্যরা প্রতিদিন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। কখনো কখনো বাসায় সম্ভব না হলে উনাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ঘন ঘন হাসপাতালে নিতে হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা সুবিধাজনক নয়। আমরা বারবার বলছি উনি যে সমস্যায় ভুগছেন তার পরিপূর্ণ চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। কখন তিনি বাইরে যেতে পারবেন তা আল্লাহই জানে।
এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, উনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। সাতদিন পরপরই তাকে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন।
গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে আবারও খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাকে বাসায় নেওয়া হয়। খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। তার সেই মুক্তির মেয়াদ প্রতি ছয় মাস পর পর বাড়ানো হলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।
Leave a Reply