জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কতটা সংকীর্ণ মানসিকতার হলে, বিএনপির মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতে পারে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী অপশক্তি সর্বদাই দেশের জনগণের অমঙ্গল কামনা করে।
বুধবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একের পর এক মেগাপ্রকল্প উদ্বোধন করে যাচ্ছেন। যা বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহের সৃষ্টি করছে। এ কারণেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বিএনপি নেতৃবৃন্দ। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি কোনো উন্নয়ন করেনি বরং দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত থেকে বাংলাদেশের ললাটে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কালিমা লেপন করেছিল। তাই তারা পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্প নিয়ে ধারাবাহিকভাবে অবান্তর ও মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করছে। আমেরিকা-ইউরোপসহ পৃথিবীর উন্নত দেশে পারমাণবিক শক্তি আজ মানবিক কল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের ৩২টি দেশে ৪০৮টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সমস্ত পৃথিবীতে উৎপাদিত বিদ্যুতের শতকরা ১০ ভাগ আসে পারমাণবিক শক্তি থেকে। ফ্রান্সে শতকরা ৭৫ ভাগ ও যুক্তরাষ্ট্রে শতকরা ২০ ভাগ বিদ্যুৎ পারমাণবিক শক্তি থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। শূন্য কার্বন নিঃসরণের কারণে এটি সর্বোচ্চ পরিবেশবান্ধন। এ ধরনের পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন বিএনপির পছন্দ নয়, তাই তারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আজ বিষোদগার করছে। কতটা সংকীর্ণ মানসিকতার হলে, বিএনপির মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এ ধরনের মেগাপ্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতে পারে।
‘দেশবাসী জানে বিএনপির রাজনীতির হাতিয়ার হচ্ছে গুজব-মিথ্যাচার আর অপপ্রচার। যে দলের শীর্ষ নেতা ‘ছোড়া তালির পদ্মাসেতুতে কেউ উঠবে না’ বলে হুমকি দিয়েছিল, সে দলের মহাসচিবের পক্ষেই এ ধরনের অবান্তর ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রদান করা সম্ভব। পলিটিক্যাল হিউমারের বিষয়বস্তুকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার মতলব পরিহার করুন। রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মিথ্যাচারের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো হত্যার রাজনীতি করে না। হত্যাকারীর দল হলো বিএনপি। বিএনপি নেতারা বিশ্বজনীন স্বীকৃত সত্যকে বিকৃত করে দেশে আজ সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলব ছিল জিয়াউর রহমান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান প্রহসনের কোর্ট মার্শাল করে কর্নেল তাহেরসহ শত শত মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারসহ সেনা-নৌ ও বিমানবাহিনীর সহস্রাধিক সৈনিককে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধুকন্য শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল বিএনপি। বাংলাদেশে হত্যা-ক্যু-ধড়যন্ত্রের রাজনীতির সূচনা কারা করেছে? শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্য জনসভায় কবরস্থানে পাঠানোর হুমকি দেয় কারা? কারা আরেকটি পনের আগস্ট ঘটানোর হুমকি। দেয়? বিএনপির জাতীয় নেতাদের উপস্থিতিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে কেন পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার প্রোগান দেওয়া হয়? বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মানবিক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর হত্যা প্রচেষ্টার ষড়যন্ত্রকারী, ফৌজদারী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার আজ উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। উদার মানবিকতার এমন নজির আর কোথায় আছে?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি জন্মগতভাবে গণতন্ত্র ও উন্নয়নবিরোধী মানসিকতা পোষণ করে। একটি জাতিকে এগিয়ে নিতে যে সততা, দেশপ্রেম, সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও আত্মপ্রতায় প্রয়োজন তার কোনো প্রকার রাজনৈতিক চর্চা বিএনপির মধ্যে নেই। তারা ধারাবাহিকভাবে দেশের উন্নয়নবিরোধী প্রচারণা এবং অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। বিরোধী দল হিসেবে গঠনমূলক সমালোচনা প্রত্যাশিত। কিন্তু বিএনপির মতো উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কটাক্ষ এবং সংকটকালে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যাচার, গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে নোংরা ষড়যন্ত্রের লজ্জাকর নজির আর কোনো দেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি তারা কোনো দিন ক্ষমতায় গেলে এসব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া বিএনপির জন্য নতুন কিছু নয়। ১৯৬৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ সম্প্রসারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। কমিউনিটি ক্লিনিক সার্ভিস চালু করেছিলেন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী অপশক্তি সর্বদাই দেশের জনগণের অমঙ্গল কামনা করে।
Leave a Reply