জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: মাত্র ৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়ে তোপের মুখে পড়া মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদ রানাকে এবার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া মামলাটি পিবিআইয়ের হেডকোয়ার্টারকে পুলিশ সুপারের নিচে নয় এমন কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত।
সোমবার বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্দেশ দেন। আদালত বলেন, মনে রাখবেন কেউ কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
ওই মামলায় আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ রানা আদালতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করায় তাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পিবিআই এর হেড কোয়ার্টারকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলায় চার্জশিট: হাইকোর্টে তোপের মুখে তদন্ত কর্মকর্তা
এর আগে গত ১৪ মার্চ মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার থেকে ৪২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুবেল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ রানাকে কেস ডকেটসহ ৩ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল।
সোমবার শুনানির শুরুতে আদালত পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেন, আপনি মাত্র ৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলা তদন্ত শেষ করলেন? এ সময়ের মধ্যে কখন সাক্ষী নিলেন, কখন ঘুমালেন, কখন খাওয়া দাওয়া করলেন তা আমাদের দেখান।’
ওই উপ-পরিদর্শক কতটি মামলা তদন্ত করেছেন, সেগুলো কত সময়ে শেষ করেছেন তার তালিকাও দেখতে চান আদালত।
এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ রানা আদালতকে বলেন, ‘এটা আমার প্রথম তদন্ত।’
আদালত মাসুদ রানার দাখিল করা নথিতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার একটি তদন্ত প্রতিবেদন রেফারেন্স হিসেবে সংযুক্ত করা দেখতে পেয়ে ভর্ৎসনা করেন। আদালত বলেন, কেন আপনি এটা দিলেন। আপনার কাছে তো রেফারেন্স চাওয়া হয়নি। বেশি স্মার্টনেস দেখাচ্ছেন। নিজেকে বেশি স্মার্ট মনে করেন? কোর্টের সঙ্গে বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না। একেবারে কারাগারে পাঠিয়ে দেব।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের একটি হ্যাচারিতে মো. রুবেল (২২) খুন হন। এ ঘটনায় পরের দিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সোহেল নামে একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এর পর আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।
জানা যায়, রুবেল হত্যার ঘটনায় রাত দেড়টায় মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্টে তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর মামলা রেকর্ড থেকে শুরু করে সাক্ষ্য গ্রহণসহ একে একে অন্তত ৯টি ধাপ পার করে মাত্র ২২ ঘণ্টায় তদন্ত কার্যক্রম শেষ এবং পরবর্তী ২০ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণসহ তদন্তের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মাত্র ৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
Leave a Reply