অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি। আগামী দিনের ক্ষমতার দাবিদার বিএনপি মনে করছে, অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে দীর্ঘদিন ক্ষমতার লাগাম থাকলে সাধারণ মানুষের মুক্তি মিলবে না। দেশের কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। এজন্য ভোট কবে হবে তা নিশ্চিত হতে চায় বিএনপি। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে স্পষ্ট কোনো বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না।
চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের মাঝামাঝি পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার বাংলাদেশ সফররত ব্রিটিশ এমপি রূপা হককে নির্বাচনের এ সম্ভাব্য সময় জানান তিনি। এ সময় আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে বলেও ব্রিটিশ ওই এমপিকে আশ্বস্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি এর আগেও একই সময়সীমা উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই কবে নির্বাচন হবে তা নিশ্চিত হতে চায়। তারা বলছে, নির্বাচন নিয়ে জনমনে যে সংশয় তৈরি হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার এ ঘোষণায় তা কাটবে না। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনের সময়ের প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। বিএনপির দায়িত্বশীলরা জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ দফা নিয়ে সারা দেশে কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। এসব কর্মসূচি থেকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হবে।
এ ছাড়া বিএনপির সমমনা দলগুলোও নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে সভা-সমাবেশ অব্যাহত রাখবে।
বিএনপির দায়িত্বশীলরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন তাঁরা। সরকার দেশকে নির্বাচনমুখী করতে না পারলে দেশবিরোধী নানা ধরনের অপপ্রচার-ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। পতিত সরকার দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাবে। বিএনপি মনে করে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে পরবর্তী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। সর্বোচ্চ ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ হলে তাতে আপত্তি থাকবে না তাদের। তবে নির্বাচন ২০২৬ সালে গেলে সেটি হবে দীর্ঘ সময়। যা মোটেও কাম্য নয়। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটি ধারণা দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি ধারণা নয়, নির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায়। তিনি বলেন, সংস্কার যুগ যুগ ধরে চলবে, এটা নতুন কিছু নয়। সময়ের চাহিদায় সংস্কার প্রয়োজন হয়। আমরা আশা করছি, এ সরকার দ্রুততম সময়ে জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফেরত দেবে।
বিএনপির একসময়ের রাজপথের মিত্র জামায়াতে ইসলামী বলছে, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটা ধারণা দিলেও সংস্কারের বিষয়ে কিছুই বলেননি। জামায়াত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন চায়। শুক্রবার নাটোরের এক কর্মিসমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানান।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোও রোডম্যাপ প্রশ্নে এখন সরকারপ্রধানের সঙ্গে সংলাপ আশা করছে। তারা বলছে, চলতি বছরের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে। এজন্য দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। সংলাপ করে রোডম্যাপ তৈরি করা হলে সব সন্দেহ-সংশয় দূর হবে।
কৃতজ্ঞতা : বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন
Leave a Reply