জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর সিদ্দিক বাজার, বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ঘন ঘন আগুন লাগার বিষয়টিকে ‘ষড়যন্ত্রের আভাস’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়াম্যান শেখ ফজলে শামস্। শনিবার রাজধানীর ধোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উদ্যোগে শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, সংখ্যালঘুদের উপর পাকিস্তানি কায়দায় হত্যা-নির্যাতন চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, সাংবাদিক ভাইদেরকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করেছে।’
‘২০১৩-২০১৪ সালে ওরা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। হাজার হাজার যানবাহন পুড়িয়েছে, শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন জায়গা আগুনের ঘটনা ঘটছে। আজকেও ঢাকা সুপার নিউ মার্কেটে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আমি মনে করি এত ঘন ঘন আগুনের পেছনে ষড়যন্ত্রের হাত আছে কি না তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন। কারণ এত ঘন ঘন আগুনের ঘটনা কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত আগুনে পারদর্শী, তাদের এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে হবে।’
যুবলীগের এই শীর্ষনেতা দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা যাতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় পারদর্শী হতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা আমাদেরকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন কিছু খাদ্য উপহার দিয়ে। এই উপহারগুলো আপনাদের অধিকার। এগুলোকে অনুদান মনে করবেন না। সরকার সর্বদা সচেষ্ট আছে আপনাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করার জন্য।
পরশ বলেন, আজকে বিশ্বমন্দা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি হওয়াতে আপনাদের যে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা অনুভব করতে পারি। কিন্তু আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ আপনাদের পাশে আছে এবং চিরদিন থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক। কারণ, এদেশের মানুষ চরম বিপদের সময় আমাদের পাশে ছিল এবং সবসময় থাকে।
‘জনগণ থাকে সেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যারা দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, দেশকে গড়ার স্বপ্ন দেখায়। আমাদের নেত্রী এই দেশকে গড়ার স্বপ্ন বুকে ধারণ করে, তাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে এই দেশের মানুষের রক্তের সম্পর্ক। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার যোগ্যতা রাখে।’, বলেন পরশ।
যুবলীগ সভাপতি বলেন, মাত্র ৯ মাস পরে আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমার বিশ্বাস আপনারা নিশ্চয়ই তাদেরকেই ভোট দিবেন, যারা আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করেছে। আপনারা নিশ্চয়ই তাদেরকেই ভোট দেবেন, যাদের দ্বারা গণতন্ত্র, অর্থাৎ আপনাদের অধিকার নিশ্চিত হবে, শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা হবে এবং সবার জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এই অঙ্গীকারসমূহ পূরণ হলেই আমরা গড়ে তুলতে পারব একটা সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ।
বিএনপি-জামায়াত সরকার দেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল উল্লেখ করে পরশ বলেন, ‘আমাদের সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন করেছে, শক্তিশালী করেছে। আজকে একটা মেসেজ ক্লিয়ার- দুর্নীতিবাজ যেই হোক, কারোরই রক্ষা নাই। আজকে দলীয় নেতাকর্মী বলেন আর প্রশাসনিক আমলা বলেন দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতেই হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দিয়েছে। তাই এমপি-মন্ত্রী বা প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। সবার সাজা হচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াত সরকার এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল মন্তব্য করে পরশ বলেন, শেখ হাসিনা সরকার এই দেশ থেকে জঙ্গিবাদ প্রায় নির্মূল করে দিয়েছে। ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পর থেকে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রয়েছে বলেই একটা স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে। কিছু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা থাক সত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হারিছ মিয়া শেখ সাগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষ, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইদুর রহমান জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মাকসুদুর রহমান, ইব্রাহিম খলিল মারুফ, দপ্তর সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ, কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।
Leave a Reply