জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: বিদেশি প্রভুদের কাছে না গিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
সোমবার (১০ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে অংশ নিয়ে হানিফ এ আহ্বান জানান।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আপনারা (বিএনপি) জনগণের ওপর আস্থা রাখুন। ক্ষমতায় থাকতে যে অপকর্ম করে গেছেন সেই অপকর্মের যদি মূল্যায়ন হয়, তাহলে ধিক্কার ছাড়া আর কোনো প্রাপ্তি আপনাদের নেই। আপনারাও জানেন সেটা। আর জানেন বলে নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চান।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা (বর্তমান মুজিবনগর) গ্রামের আম্রকাননে ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ দিবসটি আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত, ইতিহাসের অংশ। আজকে যারা এই দিবস পালন করে না, তারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না।
‘এ কারণে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে মাঝেমধ্যে চলে আসে তাদের পাকিস্তান প্রীতির কথা, পাকিস্তানের প্রতি তাদের আনুগত্য ও ভালোবাসার কথা। এখনো তারা পাকিস্তানের আদর্শ ধারণ করে বলে তারা বারবার পাকিস্তানের কথা বলে।’
হানিফ বলেন, ‘আজকে সেই বিএনপি নামক দলটি আন্দোলন করছে। কিসের সংগ্রাম, কিসের আন্দোলন? আন্দোলন, আন্দোলন খেলা খেলে লাভ নেই। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের আন্দোলন খেলার কথা জেনে গেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও জানে এই আন্দোলনের কোনো ফলাফল নেই। এর ফলে দলের নেতাকর্মীরা ঘরে উঠে গেছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন- নির্বাচন কমিশন যে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ওনারা এসব সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবেন না। কেন নির্বাচনে অংশ নেবেন না? আপনারা সবসময় বলেন জনগণ নাকি আপনাদের পক্ষে। জনগণ যদি আপনাদের পক্ষে থাকে তাহলে নির্বাচনে অংশ নেবেন না কেন? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, মূলত আপনারা জানেন জনগণ আপনাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের ভোটে জয়লাভ করার সুযোগ আপনাদের নেই। এই ভয়ে আপনারা নির্বাচনে যান না। আর এ কারণে আপনারা সবসময় ষড়যন্ত্রের পথ খোঁজেন।
হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল। বর্তমানে যার কাণ্ডারি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এই দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না। এই দলের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেও কোনো লাভ হবে না। কারণ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন একমাত্র জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বেই হয়।
আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ষড়যন্ত্র অনেক আগে শুরু হয়েছে। ষড়যন্ত্র কারা করে? যারা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি চায় না তারাই ষড়যন্ত্র।
নোবেলজয়ী ড. ইউনুসের প্রতি ইঙ্গিত করে হানিফ বলেন, যিনি বাংলাদেশের গরিব মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে টাকা পাচার করে পশ্চিমা শক্তিকে টাকা দিয়ে নোবেল পুরস্কার নিয়েছেন। ওনাকে নিয়ে রাজনৈতিক দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসে যাচ্ছেন, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে গিয়ে ওনারা অনেকেই বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে বৈঠক করছেন। লক্ষ্য একটাই, ষড়যন্ত্র করে সরকার উৎখাত।
হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে, বিপদে-আপদে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ইউনূস সাহেবকে কেউ দেখেনি। মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে। উনি নাকি আমেরিকাতে বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেছে। উনি এই টাকা কোথায় পেলেন? উনি এখানকার (বাংলাদেশ) গরিবের টাকা মেরে, গ্রামীণফোনের শেয়ারের টাকা আত্মসাৎ করে সেই টাকা পাচার করে এবং সেই টাকা বিনিয়োগ করে নোবেল নিয়ে এখন বাংলাদেশে এসে নতুন ষড়যন্ত্র করে সরকার উৎখাত করতে চান।’
অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়ে হানিফ বলেন, রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ কিছুটা কষ্ট পাচ্ছে। অসচ্ছল মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে ভোগান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। রমজানে যদি দাম বাড়িয়ে দুর্ভোগের চেষ্টা করেন তাহলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপির সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
Leave a Reply