জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: মানুষের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যাসেবা পৌঁছানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘আমার একটা (ভিন্নরকম) জীবন ছিল৷ একটা টেলিফোন এসে তা পরিবর্তন করে দিয়েছ। বাসায় বসে টেলিভিশন দেখছিলাম। তখন ওই ফোন কলটি এসে সব বদলে দেয়। আগে বাসায় বিশ্রাম নিতাম, এখন সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছি। কারণ আমি মানুষের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যাসেবা পৌঁছে দিতে চাই। আমরা যদি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে এত ভিড় হবে না।’
রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় অমর একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে ঝুমঝুমি প্রকাশনের সামনে সিনিয়র সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের ‘যাপিত জীবনের গল্প’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
এসময় সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আজকের অবস্থা পর্যন্ত সর্বদায় সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেয়েছি।
সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে সর্বদা সহযোগিতা করেছে। ৫ থেকে ৫০০ শয্যার বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপনে সাংবাদিকরা অনেক অবদান রেখেছেন। সাংবাদিকরা আমার সঙ্গে থেকে সমস্যাগুলো সারা পৃথিবীর কাছে তুলে ধরেছেন। তার জন্য আজকে বার্ন ইনস্টিটিউটকে বিশ্বের সর্ব-বৃহৎ বার্ন হাসপাতাল হিসেবে বানাতে পেরেছি। সাংবাদিকদের অনেক কষ্ট সহ্য করে কাজ করতে হয়। কিন্তু সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে যে, তা কত উপকারে আসে আমি তার প্রমাণ।’
ঝুমঝুমি প্রকাশনের (৭১ ও ৭২) স্টলে ‘যাপিত জীবনের গল্প’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঝুমঝুমি প্রকাশনের (৭১ ও ৭২) স্টলে ‘যাপিত জীবনের গল্প’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরিবর্তনের প্রত্যয় জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বার্নের চিকিৎসক হিসেবে জানি এই রোগীরা কতটা কষ্ট করেন। ঢাকার বাইরে বার্ন ইউনিট নেই। গরীব মানুষকে কষ্ট করে ঢাকায় আসতে হয়। আমি এ ধরনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে কাজ করছি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করবো। শতভাগ না পারলেও ৫০ ভাগ করতে পারলেও আমি নিজেকে সফল মনে করবো।’
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের বই সম্পর্কে সামন্ত লাল বলেন, ‘মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল আমার সঙ্গে কাজ করেছে। সে আমার জীবনের উত্থানসহ অনেক কিছুর সাক্ষী। কেমন করে শূন্য থেকে বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপন করলাম এবং সেখান থেকে আজকের জায়গায় আসাসহ সব কিছুর সাক্ষী সে। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।’
‘যাপিত জীবনের গল্প’ বইয়ের লেখক সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, সাংবাদিকতা জীবনে গত তিন দশকে নানা ঘটনা দেখেছি। যার অনেকটাই রিপোর্ট আকারে প্রকাশ পায় না। আমি সেগুলোই ফেসবুকে তুলে ধরছিলাম। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আরিফ ভাইয়ের পরামর্শে সেগুলো বই আকারে প্রকাশ করলাম। এক্ষেত্রে আমার পরিচিত সাংবাদিকরা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহোদয় এসেছেন। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। স্যার সব সময় সহযোগিতা করেছেন। তেমনই একটি মেয়েকে পাঠানোর ঘটনা বইয়ে উল্লেখ আছে। বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় তার যে অক্লান্ত পরিশ্রম তাও এখানে উঠে এসেছে।’
জ্যেষ্ঠ এ সাংবাদিক বলেন, ‘অনেকে সাংবাদিকতাকে ফ্যান্টাসি মনে করেন। কিন্তু প্রকৃত সাংবাদিকতা করতে হলে অনেক দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আরিফ সোহেলের সঞ্চালনায় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, ঝুমঝুমি প্রকাশনির প্রকাশক শায়লা রহমান তিথিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ্য সাংবাদিকরা।
Leave a Reply