জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: আসন্ন বরিশাল সিটি করেপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীর একাংশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা উপেক্ষা করায় বরিশাল মহানগর কমিটি ভেঙে দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ থাকলেও বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় সেই বিভেদ প্রকাশ্যে আসে। এর পরই বিষয়টি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নজরে আসে।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের সমর্থকদের অভিযোগ, সাদিক আব্দুল্লাহ দলের মনোনয়ন না পেয়ে এলাকায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তার সমর্থকরা নৌকার পক্ষে কাজ করছে না। এসব অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে আওয়ামী লীগে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নজরে নিয়েছেন।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মেয়রের পদে থাকার পাশাপাশি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকায় সাদিক আব্দুল্লাহ নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন। দলের মধ্যে অনেক নেতাকে কোণঠাসা করে রেখেছেন। এছাড়া বরিশালে তার বিশাল কর্মীবাহিনী ও সমর্থক থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের তেমন গুরুত্ব দিতেন না। দল থেকে মনোনীত না হওয়ায়, নিজের গুরুত্ব বুঝাতে এখনো তার সমর্থকদের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেননি। এসব বিষয় আমলে নিয়ে এই কমিটি বিলুপ্ত করা হতে পারে।
নেতারা আরও জানান, দলের সিদ্ধান্ত যদি স্থানীয় নেতাকর্মীরা না মানে এবং নৌকার পক্ষে কাজ না করে তাহলে বরিশাল মহানগর ও জেলার কমিটির ভেঙে দেওয়া হতে পারে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের সঙ্গে মহানগর কমিটির টানাপোড়েনের অবসান ঘটাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
বরিশাল মহানগর নেতাকমীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও তার চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহর মধ্যে শীতল লড়াই প্রকাশ্যে এসেছে। মে দিবস উপলক্ষে নগরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির আয়োজন করেছে শ্রমিক লীগের দুটি পক্ষ। একটি পক্ষে সাদিক আবদুল্লাহ এবং অন্য পক্ষে খায়ের আবদুল্লাহর সমর্থকেরা কর্মসূচি পালন করছেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাদিক ও আবুল খায়ের অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।
বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাই কাজ করছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এই নির্বাচন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিটি নির্বাচনের আগে বরিশাল ও মহানগরের কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। সিটি নির্বাচনের আগে কমিটি বিলুপ্তি করা হবে না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন এলাকায় গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী এখনো মাঠে নামেনি। সময় হলে এবং দলীয় প্রতীক বরাদ্দ হলেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সবাই এক হয়ে কাজ করবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রতিটা নির্বাচনই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেসব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি।
Leave a Reply