জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলায় আসামি। অস্ত্র মামলায় আদালতে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। তাকে ধরতে ঝুলছে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ। পালিয়ে দুবাইয়ে আশ্রয় নেওয়া ফেরারি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান তবুও থেমে নেই।
শনিবার বিকালে তার নামের ফেসবুক আইডি থেকে চারটি ছবি পোস্ট করেছেন আরাভ খান। ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘দুবাইয়ের পুলিশ প্রধান এবং শেখ সাহেবে ছেলে…আলহামদুলিল্লাহ…বিশেষ সাক্ষাৎ…সকল বিপদ থেকে রক্ষা করার মালিক আল্লাহ…সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য’।
আরাভের পোস্ট করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটা ছবিতে তিনি দুজন আরবীয় পোশাক পরিহিত ব্যক্তির সঙ্গে চেয়ারে বসা। আরেকটি ছবিতে এক আরবীয় ব্যক্তি আরাভের কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়েছেন।
ছবির ব্যক্তিগুলো কে বা কারা ঢাকা টাইমস তা নিরপেক্ষ ভাবে যাছাই করতে পারেনি। যদিও আরাভ খান পোস্টে দাবি করেছেন ‘পুলিশ প্রধানের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎ’।
এবারই নয় শুধু বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত ও খুনের মামলার আসামি আরাভ খান কদিন পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ‘সফলতা’ প্রচার করছেন। সুদূর আরব আমিরাতে বসে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন ইন্টারপোলের রেড নোটিশভুক্ত ফেরারি এইিআসামি।
ঈদুল আজহার আগেও আরাভ খানকে সরব দেখা গেছে ফেসবুকে। চিত্রা হরিণ, ব্রাহমা গরু, উট, দুম্বা ও ছাগল কোরবানি দেওয়ার খবর জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ট্রাভেল এজেন্সি খোলা ও তার স্বর্ণের দোকানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য বিশেষ মূল্য ছাড় দেওয়ার খবরও।
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, আরাভ খান অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার কাগজপত্র ইন্টারপোল ও দুবাই পুলিশকে পাঠানো হয়েছে। তাকে ফেরাতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।
আরাভকে ফেরানোর কাজটি কনটিনিউ প্রসেস (চলমান প্রক্রিয়া) বলে ঢাকা টাইমসকে বলেছেন পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মনজুর রহমান। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা তৎপরতা চালাচ্ছি। নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে ইন্টারপোল ও দুবাই পুলিশের সঙ্গে। পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।’
আরাভ খান ১০ বছর কারাদণ্ড পাওয়ার পর পুলিশ নতুন কোনো তৎপরতা চালিয়েছে কি না- জানতে চাইলে এআইজি মনজুর রহমান বলেন, ‘আরাভ খানের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে পুলিশ। কারাদণ্ড পাওয়ার কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দেশের পুলিশ ও ইন্টারপোলকে সরবরাহ করা হয়েছে।’
এদিকে ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে ওয়ান্টেটের তালিকায় রবিউল ইসলাম রবিউল অর্থাৎ আরাভ খানের নাম দেখা গেছে। আরাভের পাসপোর্টে রবিউল ইসলাম নাম থাকায় ওই নামেই রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি থাকার পর সেই অপরাধীকে সংশ্লিষ্ট দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অপরাধী অবস্থান করা দেশের পলিসির ওপর নির্ভর করে।
দুবাইয়ে নিজের স্বর্ণের দোকান আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধন ঘিরে আলোচনায় আসে পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাভ খানের নাম। গত ২৩ মার্চ বাংলাদেশি অপরাধী হিসেবে ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় রবিউল ইসলাম রবিউলের নাম যুক্ত হয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীতে আরাভের অফিসে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ পুড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় আরাভ খান ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়কে। যিনি এখন শত কোটি টাকার মালিক বলে আলোচনা হচ্ছে। তার অর্থের উৎস নিয়ে আছে ধোঁয়াশা।
Leave a Reply