জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নানাকারণে বাতিল হওয়া প্রার্থিতা ফিরে পেতে প্রথম দিন নির্বাচন কমিশনে ৪২ জন আপিল করেছেন।
মঙ্গলবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এসব আবেদন জমা পড়ে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিন প্রার্থিতা ফিরে পেতে ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি নয়টি আবেদন জমা পড়েছে।
ইসির অস্থায়ী বুথের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, প্রথম দিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলের বুথে ২টি, খুলনা অঞ্চলের বুথে ৮টি, বরিশাল অঞ্চলের বুথে ২টি, ময়মনসিংহ অঞ্চলের বুথে ৯টি, ফরিদপুর অঞ্চলের বুথে ৫টি, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বুথে ৬টি, ঢাকা অঞ্চলের বুথে ৬টি, কুমিল্লা অঞ্চলের বুথে ৩টি এবং সিলেট অঞ্চলের বুথে ১টিসহ আবেদন জমা পড়েছে মোট ৪২টি। রাজশাহী অঞ্চলের বুথে কোনো আপিল আবেদন জমা পড়েনি।
কোন আসনে কতটি আপিল জমা
নির্বাচন কমিশনে অস্থায়ী ক্যাম্পের ভেতরে অঞ্চলভিত্তিক ১০টি বুথে আপিল গ্রহণ করা হচ্ছে।
ক্যাম্পের এক নম্বর বুথটি রংপুর অঞ্চলের। এই অঞ্চলের বুথে ২টি আপিল জমা পড়েছে। যার মধ্যে একটি স্বতন্ত্র, অন্যটি বিএনএফ’র। এরমধ্যে ১ শতাংশ ভোটারের তালিকা যুক্ত তথ্য সঠিক না হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল অন্যদিকে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দাখিল না করায় বিএনএফ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
দুই নম্বরে বুথটি রাজশাহী অঞ্চলের। এই বুথে প্রথম দিনে কোনো আপিল জমা পড়েনি।
তিন নম্বরে বুথটি খুলনা অঞ্চলের। এই বুথে ৮টি আপিল জমা পড়েছে। জমা পড়া আপিলের মধ্যে ৩টা দলীয় বাকি ৫টি স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্রদের ৫টি মনোনয়নপত্র ১ শতাংশ ভোটারের তালিকা যুক্ত তথ্য সঠিক না হওয়া, দলের মধ্যে ২টি বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা এবং ১টি ঋণ খেলাপিজনিত কারণে বাদ পড়েছিল।
চার নম্বর বুথটি বরিশালের অঞ্চলের। এই বুথে প্রথম দিন ২টি আপিল জমা পড়েছে, যেগুরো স্বতন্ত্র প্রার্থীর। এরমধ্যে একটি ঋণ খেলাপিজনিত সমস্যা ও অন্যটি ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় বাতিল হয়েছিল।
পাচ নম্বর বুথটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের। এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ ৮ জন প্রার্থী আপিল করেছেন। মামলাজনিত কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম খানের। এছাড়া বাকি ৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায়।
৬ নম্বর বুথটি ঢাকা অঞ্চলের। এই অঞ্চলে ৬টি আপিল আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১% শতাংশ ভোটারের তালিকায় গড়মিল, বাকি ৪ জনের মধ্যে একজন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী আয়কর সংক্রান্ত জটিলতা, একজন বিএনএফের আয়কর সংক্রান্ত, একজন বিএনএসের আয়কর রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত ও অপর একজন বিডিবির প্রার্থী গ্যারান্টার হিসাবে ঋণ খেলাপির জন্য বাদ পড়েছিলেন।
৭ নম্বর বুথটি ফরিদপুর অঞ্চলের। এই অঞ্চলে ৫টি আপিল আবেদন জমা পড়েছে। এরমধ্যে দলীয় এক প্রার্থী, বাকি ৪টি স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্রদের মধ্যে দুইজনের স্বাক্ষরজনিত কারণ, ১ জনের ১% ভোটারের স্বাক্ষরজনিত অপর একজনের পুরাতন ঋণজনিত কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল।
৮ নম্বর বুথটি সিলেট অঞ্চলের। এই বুথে শুধুমাত্র তৃণমূল বিএনপির একজন প্রার্থী আপিল করেছেন। আয়কর নথি সংক্রান্ত বিষয় মনোনয়নপত্রে অসম্পূর্ণ থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল।
৯ নম্বর বুথ কুমিল্লা অঞ্চলের। এই অঞ্চলে ৪টি বাতিল মনোনয়নের জন্য আপিলের আবেদন হয়েছে।
১০ নম্বর বুথটি সিলেট অঞ্চলের। এর অঞ্চলে জমা পড়া ১টি আপিল হচ্ছে তৃণমুল বিএনপি আয়কর সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে।
প্রসঙ্গত, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার সারাদেশে ১৯৮৫ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আর পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত না থাকা, অসম্পূর্ণ কাগজপত্র দাখিল করা এবং ঋণ খেলাপিসহ নানা কারণে বেশকিছু হেভিওয়েট প্রার্থীসহ ৭৩১ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।
পরে আপিল দায়ের, শুনানি ও নিষ্পত্তিসংক্রান্ত এক নোটিশে ইসি জানায়, প্রার্থিতা ফিরে পেতে পাঁচ দিনের মধ্যেই আপিল করতে হবে। অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি আকারে আপিল দায়ের করতে পারবেন।
তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে।
Leave a Reply