জেএন২৪নিউজ ডেস্ক: বাঙালি পরিবারে ঘরোয়া রূপটানে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে কেশুতি পাতা বা ভৃঙ্গরাজ। এমনকি আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও চুলের যত্নে এই উল্লেখ রয়েছে। ‘কমপ্লিট বুক অব আয়ুর্বেদিক হোম রেমেডিস’ নামে একটি বইতে পাতাটির বিভিন্ন গুণের কথা বলা আছে।
তাই আপনিও চুলের যত্নে কেশুতি পাতা নানা উপায়ে কাজে লাগাতে পারেন। যেমন – ব্যবহার করতে পারেন ভৃঙ্গরাজ তেল। আবার আগাছা হিসেবে পরিচিত এই পাতা দিয়ে হেয়ার মাস্ক বানিয়েও চুলে লাগাতে পারেন।
কেশুতির গুণাগুণ
পাতলা চুল ঘন করতে এই পাতার গুণাগুণ অপরিসীম। একাধিক গবেষণাতেও এই তথ্য উঠে এসেছে। আসলে কেশুতি পাতার রস স্ক্যাল্পের অন্দরে হেয়ার ফলিকলগুলোকে সক্রিয় করে। বাড়ায় রক্ত সঞ্চালন। স্বাভাবিকভাবেই চুলের বৃদ্ধিও হয় দেখার মতো।
কেশুতি পাতায় উপস্থিত ভিটামিন ও মিনারেল চুল পড়া কমাতে সিদ্ধহস্ত। এছাড়া দুশ্চিন্তা সম্পর্কিত হেয়ার ফল কমানোর জন্যেও এই পাতার তেলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গবেষণা বলছে, ভৃঙ্গরাজ তেল মালিশে দুশ্চিন্তা কমে। স্বাভাবিকভাবেই হেয়ার ফলও চলে আসে নিয়ন্ত্রণে।
পাবেন আরও যত উপকার
ভৃঙ্গরাজে পাওয়া যায় ভিটামিন ডি ও ই এবং আয়রন। এই তিন উপাদানই চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এই পাতায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট স্ক্যাল্পের অন্দরে ফ্রি ব়্যাডিকালসের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
স্ক্যাল্পের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতেও কেশুতি পাতার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই নিয়মিত কেশুতি পাতার রস লাগালে খুশকির সমস্যাও বাগে আসবে বৈ কী! গ্রামে আগানে-বাগানে এই পাতা প্রচুর পরিমাণে জন্মে থাকে।
কেশুতির রস লাগান স্ক্যাল্প বা মাথার তালুতে
বাড়ির আশপাশে প্রধানত জলা স্থানের পাশে এই পাতার খোঁজ পাবেন আপনি। এই পাতা বাড়িতে তুলে আনার পরে ভালো করে ধুয়ে নিন। পাতাগুলো ছাড়িয়ে আলাদা করে রাখুন। তারপর এই পাতা ভালো করে বেটে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন। এটি আপনি সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন।
না হলে এই পেস্ট একটি সাদা সুতির কাপড়ে ছেঁকে রস বের করে নিন। এই রসও স্ক্যাল্পে মালিশ করলে বিশেষ উপকার পাবেন। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে ২-৩ দিন এইভাবে চুলের যত্ন নিন।
ব্যবহারে দ্বিতীয় পদ্ধতি
কেশুতি পাতার রস সরাসরি আপনি স্ক্যাল্পে লাগাতেই পারেন। এছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন হেয়ার মাস্ক হিসেবেও। সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন ২ টেবিল চামচ ভৃঙ্গরাজ পাউডার এবং আমলকী পাউডার। একটি পাত্রে দুটি উপকরণ সম পরিমাণে নিয়ে তার মধ্য়ে মিশিয়ে দিন ঘরে তৈরি টক দই।
প্রতিটি উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে বানিয়ে নিন ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক। এটি চুলে এবং স্ক্যাল্পে লাগান। ১ ঘণ্টা পর ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ দিন এই হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন, তার চেয়ে বেশি নয়। তাহলে কিন্তু উপকারের বদলে ক্ষতিই হবে।
Leave a Reply