জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে শয়তানের অনুচর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি কথা বলেন, হাছান মাহমুদের চাইতেও তাকে আরো বেশি মনে হয়েছে আওয়ামী অনুগত, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর। আজকে নির্বাচন নিয়ে গণতন্ত্র নিয়ে, মানুষের স্বাধীনতা নিয়ে যে শয়তানি করা হচ্ছে সামগ্রিকভাবে সেই শয়তানের অনুচর মনে হচ্ছে এই নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানকে।
শনিবার বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশের বেশিরভাগ জনগণের পক্ষে কাজ করা দল হচ্ছে বিএনপি, যার বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে। অসংখ্য নেতাকর্মী এখন নিজের বাড়িতে থাকতে পারে না। সারাদেশে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বিরাজমান। এই বিরাজমান পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বলে বিএনপি নাকি সন্ত্রাসী দল। কারো ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। জনগণের ভাগ্য নিয়ে তো আপনি ছিনিমিনি খেলছেন। আজকে সিপিডি বলেছে গত ১৫ বছরে শুধুমাত্র ব্যাংক থেকেই ৯৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। কারা করেছে? আপনারা করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাহলে আওয়ামী লীগ কি সন্ন্যাসী দল? আমাদের দলের প্রধানকে ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাসে বন্দি করে রেখেছেন, আমাদের ২৩ থেকে ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে বন্দি করে রেখেছেন। দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটি এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে বন্দি করে রেখেছেন। এর চেয়ে দুঃশাসন আর কী হতে পারে?
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, যারা ছাত্র রাজনীতি করে এসেছে তারা অনেকেই আপনার কাছে তাদের আত্মা বিক্রি করেছে। তাদের সেই মনুষত্ব বিবেক আর নেই। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদরা জানতাম ছাত্র রাজনীতি করেছেন। ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, তিনি এখন ফ্যাসিবাদের মুখপাত্র হয়েছেন। শুধু আমরা কেন, সারাদেশের জনগণ কেউ আর তাদেরকে পছন্দ করে না।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এরশাদের আমলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন বর্জন করেনি? তখন তিনি সরকার চেয়েছিলেন, নির্বাচন পছন্দ হয়নি তাই নির্বাচন বর্জন করেছেন। ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। মনে হচ্ছে উনি হলেন পবিত্র সন্ন্যাসী। উনি যেটা বলবেন সেটাই মানতে হবে। দেশের জনগণ বুদ্ধিজীবী এমনকি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছে। শুধু উনার এক গোয়েমি, তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করছেন না। তিনি জানেন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিতবে না।
রিজভী বলেন, বিএনপি ও সমমানা দল যে আন্দোলন করছে সে আন্দোলন ন্যায় সঙ্গত। সত্যের স্বপক্ষের আন্দোলন। যারা সত্যের পক্ষে থাকে তাদের উপরে তো নিপীড়ন নির্যাতন নেমে আসে। আমাদেরকে সকল বাধা অতিক্রম করতে হবে। সরকারের সব রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত মোকাবেলা করেই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এ দেশে এসে খবরদারি করছে। মনে হচ্ছে আমরা উপনিবেশের মধ্যে বসবাস করছি। এটি হতে পারে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে যারা সমর্থন দেবে আমরা তাদেরকে স্বাগত জানাই। আমাদের রাষ্ট্রীয় শক্তি নেই, আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নেই, কিন্তু আমাদের আছে জনগণ।
২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ১৮৫ জনের বেশি নেতাকর্মী। মোট পাঁচটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪৭০ জনের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে। মোট আহত ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী বলেও জানান রিজভী।
Leave a Reply