জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের কেউ যদি স্বতন্ত্র বা অন্য প্রার্থীর ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করেন, সংঘাতে জড়ান তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনিই নির্বাচিত হবেন। কেউ কারো প্রতি হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। যদি আমাদের দলের কেউ স্বতন্ত্র বা অন্য প্রার্থীর সঙ্গে সংঘাত, বিশৃঙ্খলা করে তাহলে রেহাই নেই। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পাঁচটি জেলার নির্বাচনি জনসভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে একথা বলেন তিনি। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস প্রান্ত থেকে জনসভায় যুক্ত হন সরকারপ্রধান। জেলাগুলো হচ্ছে— পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নাটোর, পাবনা ও খাগড়াছড়ি।
নির্বাচনের বিষয় দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচন বানচাল করার নামে আগুন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ করে কেউ যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে এজন্য সতর্ক থাতকে হবে। আগামী ৭ জানুয়ারি জনগণ ভোট দেবে। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সবার জন্য নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হ্যাঁ আমরা এটা উম্মুক্ত করেছি। এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, স্বতন্ত্রপ্রার্থী অন্যান্য দলের প্রার্থীও আছে। প্রত্যেকেই জনগণের কাছে যাবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনিই নির্বাচিত হবেন। কেউ কারো প্রতি হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এখানে কোনো সংঘাত, বিশৃঙ্খলা মারামারি দেখতে চাই না। এখানে যদি আমাদের দলের কেউ সংঘাত, বিশৃঙ্খলা মারামারি করে তাদের রেহাই নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা চাই জনগণ নির্বিঘ্নে যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে বিজয় করবে। গণতন্ত্রকে আমাদের আরও দৃঢ় করতে হবে। এর যদি ব্যত্যয় ঘটে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কী হবে, শেষ হয়ে যাবে। যত উন্নয়ন অগ্রগতি করেছি তা থাকবে না। এই নির্বাচনে কোনো সংঘাত বিশৃঙ্খলা দলাদলি দেখতে চাই না। এই সংঘাত দলাদলির মধ্যে যদি আমাদের মনোনীত প্রার্থীও থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যাদের রাজনীতি করার অধিকার ছিল না খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধন করে তাদের সেই অধিকার দিয়েছে। যে সারাদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ছুটে ছিল তাকে জিয়াউর রহমান প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিল। যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী, পাকিস্তানের পাসপোর্টধারী, তাদেরকে ফিরিয়ে এনে মন্ত্রী, উপমন্ত্রী করা হয়েছিল। বিভিন্ন দূতাবাসে তাদেরকে চাকরি দিয়েছিল। যারা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল, ভুয়া ভোটার তালিকা তৈরি করে ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের মুখে এখন গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। এদেশের মানুষকে আওয়ামী লীগে ভোটের অধিকার দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের ফলাফল কী ছিল? বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট মাত্র ২৮টা সিট পেয়েছিল আর আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৮টা সিট। এতোকিছু পরও বিএনপি ভোটের কথা বলে। তারা ভোটের কী বুঝে। বিএনপির জন্মই হয়েছে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী, সংবিধান লঙ্ঘনকারীর পকেট থেকে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ভোট কারচুপি করার জন্য হ্যাঁ-না ভোট চালু করেছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে একদিকে রাষ্ট্রপ্রধান অন্যদিকে সেনাপ্রধান এবং নির্বাচন প্রধান ছিলেন যা সংবিধান লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন> মানুষকে ভালো রাখাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
‘বিএনপির সবকিছু অবৈধ, তাই তারা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তা না হলে কীভাবে বিএনপি রেলে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ালো। মা তার সন্তানকে বুকে ধরে রেখেছে, সেই অবস্থায় তাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। একইভাবে বিএনপি ২০১৩-১৪ সালে আগুন সন্ত্রাস করে দেশের শত শত মানুষকে হত্যা করেছে’—যোগ করেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ৫ জানুয়ারি (১০১৪ সালে) নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপির আগুন সন্ত্রাস করে শতশত মানুষ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাস রেল, লঞ্চ পুড়িয়েছে। এটাই হলো বিএনপির চরিত্র। এখন আবার নতুন করে তারা আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে। দেশের মানুষের শান্তি দেখলে বিএনপির মনে অশান্তি জাগে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে তারেক রহমান হাওয়া বভন, খাওয়া ভবন খুলেছিল। তাকে কমিশন না দিলে কেউ ব্যবসা করতে পারত না। তারেক মানিলন্ডারিং, অস্ত্র চোরাকারবারি, দুর্নীতি শুরু করেছিল। তার এই দুর্নীতি ধরেছিল এফবিআই এর গোয়েন্দা সংস্থা। এফবিআইর লোক এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের দুর্নীতির বিষয়ে। রাজনীতি করবে না বলে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছে তারেক। সেখানে বসে এখন নির্বাচন বানচাল করতে হুকুম দেয়। যাদের (যে দলের) জন্মই হয়নি গণতন্ত্র ও ভোটের মাধ্যমে তারাও দেশের মানুষকে কীভাবে গণতন্ত্র দেবে? তাদেরকে যদি বলি গণতন্ত্র বানান করতে তা মনে হয় পারবে না, এটাই হলো বাস্তব কথা। তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বিএনপি হলো সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতিবাজ দল।
Leave a Reply