জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার নথি গায়েবের ঘটনা অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঘটনা অনুসন্ধানে দুদকের একটি কমিটি ইতোমধ্যেই রাজউকের কাছে ১২ ধরনের তথ্য-উপাত্তের নথিপত্র তলব করেছে। সংশ্লিষ্ট নথিপত্র আগামী ১০ মের মধ্যে দুদকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
দুদকের এ অনুসন্ধান কমিটির একজন সদস্য জেএন ২৪ নিউজকে বলেন, সঠিকভাবে অনুসন্ধানকাজ সম্পন্ন করতে রাজউকের কাছে বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে ৩০ এপ্রিল রাজউক কৃর্তপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে নথি গায়েব অনুসন্ধানে দুদকের পরিচালক (সিস্টেম অ্যানালিস্ট) মো. রাজীব হাসানকে প্রধান করে সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান ও উপপরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্তের সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির বিষয়ে আদালতে অবহিত করা হয়েছে। এ কমিটি আদালতের নির্দেশ অনুসারে কাজ করছে। চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।
রাজউকের ম্যানেজমেন্ট শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করা গ্রাহকের ৩০ হাজার নথি গায়েব হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে তথ্য উপাত্ত চেয়ে দুদকের অনুসন্ধান কমিটির পাঠানো ওই চিঠিতে।
দুদকের অনুসন্ধান কমিটি সূত্রে জানা গেছে, নথি গায়েবের ঘটনায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সিপি সফটওয়্যারটির ইউজার অ্যান্ড এবং অ্যাডমিন, ডাটাবেজ কারা ব্যবহার করেছে তাদের নামের তালিকা; সিপি সফটওয়্যারটি প্রথম কবে অনুমোদন করা হয় রাজউকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এছাড়াও গত বছরের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কতগুলো নথি অনুমোদন করা হয় তার সংখ্যা, নথিগুলোর ব্যাকআপ রাখা হয়েছিল ও নথিগুলো কোনো হার্ডকপিতে সংরক্ষণ করা হয়েছিল কি না, সফটওয়্যার কার্যক্রম পরিচালনা ও অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম পদবি ঠিকানা ও পরিচয়পত্রের কপি, বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার লিমিটেডের সঙ্গে রাজউকের চুক্তির শর্তানুযায়ী টেকনো হেভেন লিমিটেডকে অপারেশন এবং সাপোর্ট মেইনটেনেন্সর দায়িত্ব দেওয়ার আগে বিডিসিসিএলের কাছে অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কি না, তাও জানতে চেয়েছে দুদকের অনুসন্ধান কমিটি।
এছাড়াও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সফটওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং সেন্টার থেকে সফটওয়্যারটির কোয়ালিটি টেস্ট করা হয়েছিল কি না; সফটওয়্যারটি চালুর আগে ইউজার একসেপটেন্স টেস্ট ও প্যানাট্রেশন টেস্টিং করা হয়েছিল কি না; সফটওয়্যার তৈরির আগে দরপত্র সংক্রান্ত সব নথিপত্র এবং এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম, পদবি, ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি চাওয়া হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান কমিটি সূত্র বলছে, নথিপত্র গায়েব হওয়ার ঘটনা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। রাজউকের সার্ভার দেখভাল করে টেকনো হেভেন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এসব নথি গায়েবের সঙ্গে রাজউক ও টেকনো হেভেনের কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত থাকতে পারেন অভিযোগ রয়েছে।
রাজউকের সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় গত ২ জানুয়ারি রাজউকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয় দুদককে।
Leave a Reply