জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: সরকার পতনের দাবিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম অভিমুখী রোড মার্চের মাধ্যমে ধারাবাহিক ১৫ দিনের কর্মসূচি শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রোড মার্চের সমাপনী সমাবেশ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিকালে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের পথসভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমাদের শেষ রোডমার্চ। চট্টগ্রামের সমাবেশ থেকেই আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপে জানা যাচ্ছে, নতুন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের ‘শেষ ধাপ’ শুরু হবে। তবে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে রেখে এমন সিদ্ধান্ত দলটির।
এর আগে বিএনপি একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলেছিলেন, অক্টোবরের শুরুতেই আন্দোলনের দাবানলে পুড়তে থাকবে সরকার। তবে এখন কঠোর কর্মসূচিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে আন্দোলনের গতিতে ভাটা পড়তে পারে বলেও মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
এর আগে ঈদের পর চূড়ান্ত আন্দোলনের কথা বলা হলেও সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করা হয় ১২ সেপ্টেম্বর। এরপর এ এক দফা দাবিতে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করার পর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাসমাবেশ করে দলটি। পরের দিন ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের পারফরম্যান্সে অনেকটা হতাশ হয়েছেন দলটির হাইকমান্ড।
সে কর্মসূচিতে নিজেদের ব্যর্থতা এবং অপ্রাপ্তি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নতুন করে নেতাকর্মীদের আন্দোলনে প্রস্তুত হতে দেওয়া হয় নির্দেশনা। সে মোতাবেক বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিলেও এক মাস পার হয়ে গেলেও কঠিন কর্মসূচি দিতে ব্যর্থ হয় দলটির নীতিনির্ধারকেরা।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিভাগীয় রোড মার্চসহ ১৫ দিনের গতানুগতিক কর্মসূচি দেওয়া হয় এবং অক্টোবরের শুরুতে বিরতিহীন কঠোর কর্মসূচির মেসেজও দেওয়া হয় নেতাকর্মীদের। তবে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে আবারও কঠিন কর্মসূচি থেকে দূরে থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ঈদ, পূজাসহ সব ধর্মীয় কর্মকাণ্ড অব্যাহত ছিল। কিন্তু যুদ্ধ তো বন্ধ ছিল না। এখনও আমরা যুদ্ধে আছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধ, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ধর্মীয় বিষয়টি সর্বজনীন। এদেশের মানুষ এমনিতেই ধর্মপ্রাণ। তবে, প্রসব বেদনা উঠলে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা উৎসব তা ঠেকিয়ে রাখতে পারে না।’
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘আজকে আমাদের চলমান আন্দোলনে সারাদেশের মানুষ সাড়া দিয়েছে এবং আমরা এ সরকারের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছি। আন্দোলনের সময়ই বলে দেবে আন্দোলনের গতিধারা কোন পথে যাবে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের দেশে হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয়ভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। আমরা সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে, আমাদের কর্মসূচি তো থেমে নেই। অব্যাহত আছে। সরকার আমাদের নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না।’
বিএনপির কর্মসূচিতে প্রচুব জনসমাগম ঘটছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আর এতেই সরকার ভয় পায়। আজকে আমাদের অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করার অনেক পাঁয়তারা করেছে সরকার। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দুর্বল ভাবার কোনো সুযোগ নেই। মানুষের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন আত্মরক্ষার জন্য ঘুরে দাঁড়ায়। দেশের মানুষও আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
Leave a Reply