জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: গত ১ মাস ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫০ থেকে ৫৪ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
শনিবার সকালে ‘রেড জোন’ ঘোষিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিগাতলা এলাকায় ডেঙ্গু বিস্তাররোধে মশক নিধনে জনসম্পৃক্ততা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে মেয়র তাপস এসব কথা জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরাউৎস নিধনের মাধ্যমে এডিস মশার প্রজন্মস্থল ধ্বংস করার কার্যক্রম গতিশীল রেখেছি, বেগবান রেখেছি। তার ফলশ্রুতিতে গত ১ মাস ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বলছে, ঢাকায় এখন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা স্থিতিশীল। প্রতিদিন যে তদারকি করা হচ্ছে, সে অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় আমরা লক্ষ্য করেছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় দৈনন্দিন ৫০-৫২- ৫৪ জন করে রোগী পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং আমরা মনে করি যে, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু কোনোভাবেই যেন এটা আর বাড়তে না পারে সেজন্যই আমাদের এই ব্যাপক কার্যক্রম।’
সকলে সচেতন হলে অচিরেই রোগীর সংখ্যা আরও কমে আসবে মন্তব্য তাপস বলেন, ‘গত সপ্তাহের পর্যালোচনায় ১৪ নম্বর ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড দুটিতে ১০ জনের বেশি রোগী সনাক্ত হয়েছে। তাই আমরা এই দুটি ওয়ার্ডকে লাল চিহ্নিত এলাকা (রেড জোন) ঘোষণা করেছি। সে প্রেক্ষিতে আমরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা, চিরুনি অভিযান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছি। সেজন্য আমরা এলাকাবাসী, সামাজিক সংগঠন, রেড ক্রিসেন্ট, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এলাকার সকল বাসাবাড়ি, স্থাপনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহবান করছি এবং তাদেরকে সাথে নিয়েই আমরা দিনব্যাপী ব্যাপক চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা আশা করি, এতে এলাকাবাসী আরো সচেতন হবে এবং অচিরেই রোগী সংখ্যা আরো কমে আসবে।’
ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলনের ওপর জোর দিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমরা কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেছি। সবাই দায়িত্ব নিয়ে নিজ নিজ বাসাবাড়ি, আঙ্গিনা, স্থাপনা পরিষ্কার রাখবে। পানি জমতে দিবে না। আমরা এটাই চাই। ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এডিসের প্রজননস্থল নির্মূল করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মৌসুম শুরু হওয়ার অনেক আগেই আমরা মন্ত্রী পর্যায়ে এবং সিটি করপোরেশনেও আমরা আলাদাভাবে রেলওয়ে, গণপূর্ত, পুলিশসহ ঢাকা শহরে যাদের বৃহত্তর স্থাপনা রয়েছে, এরকম বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করেছি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি যে, যথার্থ ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারপরও আমরা তাদেরকে সাথে নিয়ে রেলওয়ে কলোনি, থানাগুলো, হাসপাতাল এলাকা, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিষ্কার করেছি। আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। তবে আমরা আশা করব, তারা আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।’
মতবিনিময়কালে ডিএসসিসি এর আগে যে ৪টি ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে এবং সে প্রেক্ষিতে সেখানে যে প্রচার-প্রচারণা, চিরুনি অভিযান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, বর্তমানে সেসব ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে বলে জানান।
পরে ডিএসসিসি মেয়র ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডস্থ কামরাঙ্গীরচরের কয়েকটি এলাকায় বেশ ক’টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং জনসম্পৃক্ততা কার্যক্রমে অংশ নেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির এবং কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইলিয়াছুর রহমান, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হোসেন, সংরক্ষিত আসনের শিরিন গাফ্ফার ও শেফালী আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply