জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের হয়ে নিজেকে পরিচিত করে দলীয় ব্যানারে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। সেই জাহাঙ্গীর বার বার দলের বিরুদ্ধে গিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের ক্ষুদ্ধ করে তুলেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
গাজীপুরের বহু সমালোচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বরখাস্ত হওয়া সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অটল থাকার পাশাপাশি বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের দলকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলায় দলের হাইকমাণ্ড ক্ষুদ্ধ।
এসব বিষয় নিয়ে এবং দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঠেকাতে আজ ধানমন্ডিস্থ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের সঙ্গে দলীয় কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচন পরিচালনা সমন্বয় টিম বৈঠক করেছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দলের প্রধান সমন্বয়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সমন্বয়ক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, উপদেষ্টা ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন নাহার, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপুসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
খোজঁ খবর নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বৈঠকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। এছাড়া এবৈঠকে জাহাঙ্গীর আলমের কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তার সব কার্যক্রম দল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে আসার পরে এবং সিটি নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় এবং বিতর্কিত মন্তব্য করায় গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষোভপ্রকাশ করেছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় এবং পরবর্তীতে তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় জাহাঙ্গীর রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ও দলকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের কেউ না। তিনি চলেন বিএনপির মদদে। এরপরে আজ মঙ্গলবার দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঠেকাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়বলী নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথা ব্যথা নেই। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন নিয়ে আমাদের মিটিং হয়েছে। মিটিংয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতকাল সোমবার গাজীপুরে শ্রমিক লীগের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তৃণমূলের কর্মীদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আজীবন বহিষ্কার করতে পারেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জাহাঙ্গীর দলের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মানে তিনি আর দলে নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা মানে তো সে আওয়ামী লীগের না।
Leave a Reply