জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: গ্রিসে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একজনের কিডনি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আপন ভাই পরিচয় দিয়ে মূলত কিডনিদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে হয়েছে মোটা অংকের লেনদেন। এ বিষয়ে টেলিভিশনে খরব প্রচার হলে সেটি নজরে পড়ে কিডনিদাতার পরিবারের। পরে তারা হাসপাতালে ছুটে যান এবং প্রকৃত ঘটনা জানাজানি হয়।
এই ঘটনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনের। কিডনি প্রতিস্থাপনে অনিয়মের তদন্ত করতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটিতে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনে অনিয়মসহ দাতা-গ্রহীতার মধ্যে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করতে এ কমিটি গঠন করা হয়।
প্রযুক্তিনির্ভর অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা দিতে ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। ব্যয় হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এই হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। হাসপাতালটির প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন ১৫ জন চিকিৎসক। এর নেতৃত্ব দেন কিডনি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান।
মঙ্গলবার বিকালে জানা যায়, কিডনিদাতার পরিচয় গোপন করে সুসেন রায় নাম দেওয়া হয়েছে। কিডনিদাতার প্রকৃত নাম সুমিত হাওলাদার। দাতা ও গ্রহীতা সম্পর্কে ভাই নন। কিডনিদাতাকে গ্রিস পাঠানো হবে- এ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার বিনিময়ে কিডনি নেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন, বিএসএমএমইউ তদন্ত কমিটি করেছে। চার সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান বিএসএমএমইউর হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়াটিক অ্যান্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক মো. মহছেন চৌধুরী। কমিটির অপর তিন সদস্য হলেন বিএসএমএমইউর পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক আতিকুল হক, গাইনি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম এবং বিএসএমএমইউর ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. হেলাল উদ্দিন।
বিএসএমএমইউর একটি সূত্র বলছে, এ ঘটনায় দাতা-গ্রহীতার চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি হবে না। তারা সর্বোচ্চ চিকিৎসাই পাবেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সোমবার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। এটি ছিল নতুন এই হাসপাতালের প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন। এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, পিরোজপুরের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী সুজন রায় কিডনি গ্রহণ করেছেন। আর কিডনি দিয়েছেন তার ছোট ভাই ৩১ বছর বয়সী সুসেন রায়। মূলত তারা সম্পর্কে ভাই নন।
Leave a Reply