জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: ২০২০ সাল থেকে গত চার বছরে বিশ্বের পাঁচ শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, বার্নার্ড আরনল্ট, জেফ বেজোস, জেরি অ্যালিসন এবং মার্ক জাকারবার্গের সম্পদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যদিকে এই সময়ে প্রায় পাঁচ শ কোটি মানুষের সম্পদ আগের তুলনায় কমেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থাগুলোর জোট অক্সফাম এ তথ্য জানিয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে শুরু হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বরাতে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য তুলে ধরেছে অক্সফাম।
বিবৃতিতে অক্সফাম জানিয়েছে, ২০২০ সালে যৌথভাবে এই ৫ জনের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার থেকে ৮৬ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে। প্রতি ঘণ্টায় ১৪ মিলিয়ন ডলারের হারে শতাংশ হিসেবে গত চার বছরে এই পাঁচজনের সম্পদ বেড়েছে ১১৪ শতাংশ।
অন্যদিকে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় পাঁচশ কোটি মানুষের সম্পদ আগের তুলনায় কমেছে। তারা নিজেদের সম্পদের ২ শতাংশ খুইয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী বৈষম্যের ওপর ‘ইনইক্যালিটি ইনকর্পোরেটেড’ শিরোনামে বার্ষিক প্রতিবেদনে অক্সফাম জানিয়েছে, বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এক দশকের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ট্রিলিওনিয়ার পাওয়া যাবে। কিন্তু আগামী ২২৯ বছরের মধ্যেও দারিদ্র্য নির্মূল হবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত চার বছরে সম্পদ বেড়েছে গড়ে প্রায় সব শত কোটি ডলারের মালিকদের (বিলিওনিয়ার)। এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন খাতের প্রতি ১০টি শীর্ষ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের ৭টিরই হয় মালিক, নয়তো শেয়ারের অধিকারী বিলিওনিয়ার। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্য ১০.২ ট্রিলিয়ন ডলার, যা আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার সমস্ত দেশের সম্মিলিত জিডিপি-র সমতুল্য।
অক্সফামের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী পরিচালক অমিতাভ বেহার বলেন, ‘আমরা এই অসমতা এক দশক ধরে প্রত্যক্ষ করছি। কোটি কোটি মানুষ যখন মহামারি, মুদ্রাস্ফীতি এবং যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন বিলিওনিয়ারদের সম্পদ বেড়েই চলেছে। এই অসমতা কোনো দুর্ঘটনা নয়। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের দাপট ও অর্থনীতিতে তাদের একচেটিয়া বাণিজ্য, কর ব্যবস্থার অনিয়ম ও করফাঁকির সুযোগ একদিকে যেমন বিলিওনিয়ারদের সম্পদ বৃদ্ধি করছে, তেমনি অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে প্রকট করে তুলছে অসাম্য।
তিনি আরও বলেন, ‘বিলিওনিয়াররা আমাদের গণতন্ত্র এবং অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে, ক্ষমতাকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের জীবনের ওপর এত ক্ষমতা থাকা উচিত নয় – স্পষ্ট করে বলতে গেলে, কারও কাছে বিলিয়ন ডলার থাকা উচিত নয়।’
বিশ্বব্যাপী বৈষম্য বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এই অসম পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিশ্বের কোটিপতি এবং বিলিওনিয়ারদের ওপর সম্পদ কর আরোপে সকল দেশের কর নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সংস্থাটি বলছে, এতে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ১.৮ লাখ কোটি ডলার রাজস্ব আদায় হতে পারে, যা সমাজের সবচেয়ে দরিদ্রদের আর্থিকভাবে সহায়তা করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
Leave a Reply