1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন

কেউ কারো কথা মানে না, সবাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছি: প্রধান বিচারপতি

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪
  • ৩০ Time View

অনলাইন ডেস্ক : বর্তমানে দেশে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে গেছে, কেউ কারো কথা মানে না। তাই সবাই নীতি থেকে সরে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আধুনিক বিশ্বের একজন বলিষ্ঠ নেতা। বঙ্গবন্ধু তার জীবনে বহু কথা বলেছেন। পৃথিবীর সব দেশের নেতা এ একই কথা বলেছেন। সেখানে অনেক মানুষ একথা শুনে সভ্য হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কথা শুনে আমরা সভ্য হতে পারিনি। আমরা অসভ্যতে পরিণত হয়েছি।

সোমবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘দুর্নীতি ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্য শীর্ষক বঙ্গবন্ধু চেয়ার বক্তৃতা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ।

ওবায়দুল হাসান বলেন, একে অপরের প্রতি রেস্পেক্ট আমাদের দেশে কমে গেছে। কারো কথা কেউ মানে না। যে কারণে একে অপরের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে উঠেছি। এক বাহিনী অন্য বাহিনীর ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এক সংস্থা অন্য সংস্থার ওপর। যার ফলে আমরা নীতি থেকে সরে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

এসময় তিনি সরকারি পদে থেকে ভারতের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের সততা ও দুর্নীতিমুক্ত থাকার একটি উদাহরণ তুলে ধরেন। বলেন, ২০১৪ সালে ভারতের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম একটি প্রোগ্রামে গিয়েছিলেন। সেই প্রোগ্রামে তাকে একটি গ্রাইন্ডার উপহার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে উপহারটি নিতে চাননি। অনেক রিকোয়েস্টের পর গ্রাইন্ডারটি নিলেও তিনি পরেরদিন সেই কোম্পানিকে একটি চেক পাঠিয়ে টাকাটি ফেরত দিয়েছিলেন। কিন্তু কোম্পানি তার চেক ভাঙাচ্ছিল না। তখন সে তাদের বার্তা পাঠায় চেক না ভাঙালে তিনি উপহারটি ফেরত দেবেন। কারণ আব্দুল কালাম মনে করেন উপহারের পেছনে কোনো স্বার্থ থাকে। তাই আমাদের বুঝতে হবে নীতি ও দুর্নীতির মধ্যে পার্থক্য কী।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বাধীনতার আগে পাঁচটি দুর্নীতির মামলা হয়েছিল। তখন তিনি এ মামলা হওয়ার পর জেল থেকে তার বাবাকে চিঠি লিখেছিলেন, আমাকে যেহেতু দুর্নীতিবাজ বানিয়েছে আমি আর রাজনীতি করব না। একথা তিনি কষ্ট পেয়ে বলেছিলেন। পরবর্তীতে বিচারিক কার্যক্রম শক্তিশালী হওয়াতে হাইকোর্টে তিনি সবগুলো মামলায় মুক্তি পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শিক্ষিত সমাজের দুর্নীতি নিয়ে সব থেকে বেশি চিন্তিত ছিলেন।

ওবায়দুল হাসান বলেন, সে সময় বঙ্গবন্ধুর মামলাগুলোর সব বিষয়ের কথোপকথন নিয়ে হাইকোর্টে একটি প্রকাশনী চালু করা হয়েছে। সেখানে তার মামলার সব বিষয়গুলো আছে।

প্রধান বিচারপতি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে ধর্মীয় অনুসাশন মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেন। বলেন, কোনো ইবাদত কবুল হবে না যদি আপনার রুজি হালাল না হয়।

অনুষ্ঠানে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্য নিয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. হারুন- অর- রশিদ।

এ সময় তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গুবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠা করে আমাকে প্রথম দায়িত্ব দেওয়াতে আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। বঙ্গবন্ধু চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি চিন্তা করেছিলাম দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি বই লিখব।

প্রফেসর ড. হারুন- অর- রশিদ বলেন, আমার লেখা গবেষণা প্রবন্ধটি মূলত ৫৪ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে মূল অংশ ৩৫ পৃষ্ঠার। আমার বইয়ে অনেকগুলো রেফারেন্স দেওয়া আছে। রেফারেন্সকে কম গুরুত্ব না দিয়ে আমি সবাইকে অনুরোধ করব রেফারেন্সগুলো দেখতে। তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবেন আমার এ গবেষণাটি থেকে।

তিনি বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি কম বেশি সব জায়গায় আছে। কোথাও কোথাও দুর্নীতি হলেও সেখানে এর বিরুদ্ধে বলার অনেক ব্যবস্থা আছে। দুর্নীতি সম্পূর্ণ রূপে শেষ না হলেও, এটাকে অনেক অংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার অনেক বক্তৃতায় বহুবার দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি দুর্নীতিকে শুধু অসৎ উপায়ে অর্থ আয়ের বিষকে বুঝায়নি, তিনি নানাভাবে দুর্নীতিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন।

‘দেশ ভাগ হওয়ার পর থেকে ২৩ বছর ধরে পাকিস্তান বাংলাদেশকে ঔপনবেশিক হিসেবে শাসন করেছিল। তাই তখন আমাদের দাবি ছিল, বাঙালি জাতি হিসেবে মুক্তি। সে সময় দুর্নীতি নিয়ে তেমন একটা কথা বলা হতো না। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। বঙ্গবন্ধুও সে সময় দুর্নীতি নিয়ে কম কথা বলেছে, কারণ তখন আমাদের দাবি ছিল অন্য কিছু। কিন্তু পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি দুর্নীতি নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন। ঘুষ দুর্নীতি, অবৈধ মজুর সৃষ্টি করা সহ মানুষকে যেসব বিষয়ে কষ্ট দেয় তা বঙ্গবন্ধুকে সব থেকে বেশি পীড়া দিয়েছে।

তিনি বিভিন্ন জনসভায় দুর্নীতি নিয়ে সেক্টর ওয়াইজ বক্তৃতা দিয়েছেন। এমনকি তিনি তখন দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যানও দিয়েছেন।

ড. হারুন- অর- রশিদ বলেন, বর্তমানে যে দুদুক তা বিএনপি তৈরি করলেও এটা ছিল মেরুদণ্ডহীন একটি প্রতিষ্ঠান। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর এ প্রতিষ্ঠানটিকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews