1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ অপরাহ্ন

ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতিবিদরাই দেশের অভ্যন্তরে বিদেশি চাপের জন্য দায়ী

  • Update Time : সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮১ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: ঐতিহাসিকভাবে দেশের রাজনীতিবিদরা, বিদেশে থাকা সাংবাদিক এবং বেশ কিছু প্রবাসী বাংলাদেশির জন্যই দেশে বিদেশি শক্তির আবির্ভাব ঘটছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান উল্লেখ করে, মাতব্বরি চাই না বলেও মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্বাচন, রাজনীতি ও বিদেশি শক্তি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরের ক্ষমতায় দেশে ভারত, চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়েছে। আবার বিদেশিরা বাংলাদেশে অর্জিত মুনাফা নিয়ে যাচ্ছেন নিজ দেশে। সবমিলিয়ে সম্প্রতি ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ এই অঞ্চলে বিদেশিদের মনোযোগের আরও বেশি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এর আগেও বিদেশি শক্তিগুলোর তৎপরতা দেখা গেছে।

ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের এই তৎপরতায় সরকারের দায় আছে কি না প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতিবিদরাই এর জন্য দায়ী। কিছু হলেই মিশনে গিয়ে ধন্না দেয়। একশ’টা চিঠি লিখে। দ্বিতীয়ত দেশের সংবাদমাধ্যম এর জন্য দায়ী। যারা বিদেশে আছেন প্রধানত তারা দায়ী। এই কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে বিদেশিরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বেশি কথা বলতে পারছে। এই প্রত্যেকদিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের স্পোকসপারসন, তাকে ত্যক্ত করেন এই বাংলাদেশি সাংবাদিকরা। এই যে সম্প্রতি বড় বড় দেশগুলা (রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র) ঝগড়া করতেছে, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে। উই ডোন্ট ওয়ান্ট ইট (বাংলাদেশ তা চায় না) । আবার প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আছেন। এই একাধিক লোকের কারণে, এই বিচ্ছিরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইট ইজ নট ওয়ান ফ্যাক্ট’ (এটি যেকোনো একটি কারণে ঘটেনি)।

ওয়াশিংটন বা নয়াদিল্লি বিদেশি কোনো পক্ষকেই দেশের জনগণ চায় না, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তা উল্লেখ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন ‘এই যে নিনিয়ান সাব (স্যার নিনিয়ান স্টিফেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক গভর্নর জেনারেল) এসেছিলেন, তারানকো (অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো জাতিসংঘের তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল) এসেছিলেন, বিদেশিরা যে এতবার আসছেন কেউ কিছু করতে পারছেন খামোখা?’ এই প্রশ্ন রেখে তিনি আশ্বস্ত করেন ‘ দেশের মানুষের ভয়ের কিছু নেই।’

ড. মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা যেমন চাই না বিদেশিরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। তেমনি যারা আমাদের উন্নয়নের যাত্রায় সহযোগি আছেন, আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে যারা সহায়ক আছেন, তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আমরা মাতব্বরি চাই না। আমরা বিজয়ের জাতি, যারা মাতব্বরি করবে তাদেরকে আমরা গ্রহণ করতে পারি না।’ বাংলাদেশ রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিকভাবে কোনো চাপ অনুভব করছে বলেও মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

‘আমেরিকা কিন্তু বেশি কিছু চায় নাই। ইনফ্যাক্ট দে আর হেল্পিং আজ (আমাদেরকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সহায়তা করছে)। বরং যারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে (বিএনপিকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে) তাদের বিরুদ্ধে যা করার করুক। আমরা পৃথিবীকে দেখাতে চাই যে আমরা অবাধ, সুষ্ঠু উৎসবমুখর নির্বাচন করতে পারি। সংলাপমুক্ত নির্বাচন করতে পারি । এই সংলাপটা বড় ডিফিকাল্ট (কঠিন)। সম্প্রতি তারা বলছে সংঘাতমুক্ত নির্বাচন। এখানে এত মারামারি হয়, আমারাও কোনো সংঘাত চাই না। কিন্তু সেটা তো আমরা একা পারব না। সেটা করতে হলে সব দলের আন্তরিকতা দরকার।’ এই বক্তব্যের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান একটি সংঘাতমুক্ত নির্বাচন আয়োজন করাই এই সরকারের উদ্দেশ্য।

এসময় সাংবাদিকরা উল্লেখ করেন বিদেশিরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনেও জোর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের যদি সম্পৃক্ততা থাকে, তারা যদি ভোট দেন তাহলেই সেটা পার্টিসিপেটরি (অংশগ্রগণমূলক) নির্বাচন হবে। আমাদের তো ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট দেয়। শুধুমাত্র ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই সবচেয়ে কম ভোট পড়েছিল, যেটা খালেদা জিয়া বা বিএনপি’র ভোটারবিহীন নির্বাচন।’

যুক্তরাষ্ট্রে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবসসময় নির্বাচন হয় বলেও দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। দেশটির কয়েকজন সিনেটর জন কেরিসহ কয়েকজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রায়ই দেখবেন সেখানে সম্মানিত লোকদের বিরুদ্ধে কোনো দলের কেউ দাঁড়ায় না। এরা বছরের পর বছর নির্বাচিত হচ্ছে, উইদাউট এনি কনটেক্সট। কাজেই এটা নিয়ে মাথাব্যথার কিছু নাই।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সুপার পাওয়ার’ (পরাশক্তি) উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশকে আমরা কখনো ইগনোর (অগ্রাহ্য) করতে পারি না। আমরা করিও না। আমরা তাদের পরামর্শকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করি। তবে আমরা আমাদের বাস্তবতায় কাজ করি। তাদের সাথে আমাদের কন্টিনিউয়াস এনগেজমেন্ট (সার্বক্ষণিক যোগাযোগ) আছে। তারা আমাদের বন্ধু দেশ। তাদের সাথে নির্বাচন ছাড়াও বিভিন্ন রকম সম্পর্ক আমাদের আছে।’

রাজপথে অন্যতম আন্দোলনকারি দল বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তা বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি না এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করি তাহলে অবশ্যই গ্রহণ করবে। দেখুন মিশরে বড় দল ছিল ‘ব্রাদারহুড’, নির্বাচন করেনি। ইট ডাজেন্ট ম্যাটার। এরকম আফগানিস্তানেও ‘তালিবান’ কে নির্বাচন করতে দেয়া হয়নি। সরকার হিসেবে আমরা আহ্বান করব, সব দলকে চাই। কারণ, আমরাও নিজেদেরকে যাচাই করতে চাই। আমরা চাই, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসবে এবং তাদের জনসমর্থন আছে কি না, তা প্রমাণ করবে।’

র‌্যাবের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার সময়সীমার কি পরিস্থিতি জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ র‌্যাবকে পছন্দ করে কারণ এই সংস্থা দুর্নীতিমুক্ত। দেশে সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড তারা বন্ধ করেছে। কারণ তারা ট্রেইন্ড বাই ইউএস অ্যান্ড ইউকে (যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে)। র‌্যাব আছে বলেই মাদকের বিস্তৃতি কমেছে, মানবপাচার কমেছে এবং টেরোরিজম প্রতিরোধেও আমরা সফল। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।’ তবে এই ধরনের আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি বলেও আক্ষেপ করেছেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews