1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন

এনবিসি কার্ড বা অতিথি কার্ডে’ নিতে চায় মিয়ানমার, রোহিঙ্গারা যেতে চায় ‘নাগরিকত্ব’ নিয়ে

  • Update Time : শনিবার, ৬ মে, ২০২৩
  • ৬৪ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ এবং পরিস্থিতি কোনোটাই নেই বলে দাবি করেছেন রোহিঙ্গারা। শুক্রবার সরেজমিনে মিয়ানমারের রাখাইন ঘুরে এসে ২০ রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল এমনটাই দাবি করছেন।

তারা বলছেন, ছয় বছর আগের মংডুর রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর চিহ্নও নেই। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে সেনা ব্যারাক, পুলিশ ফাঁড়ি, সীমান্ত চৌকিসহ নানা অবকাঠামো। রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসন শুরুর আগে নাগরিকত্ব দাবি করেন।

আর মিয়ানমার বলছে, তারা এনবিসি কার্ড বা অতিথি কার্ড দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেতে চায়। সেখানে যাওয়ার ছয় মাস পর নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তাদের প্রতি পরিবারকে মডেল ভিলেজে একটি করে ঘর, কৃষি কাজের জন্য জমি, সার ও বীজ দেওয়া হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখতে শুক্রবার বাংলাদেশে বসবাসরত ২০ রোহিঙ্গাসহ ২৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমারে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রতিনিধি দলটি টেকনাফের জালিয়াপাড়া ঘাট থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশে যাত্রা করে। বেলা ১১টার দিকে তারা মংডু শহরে পৌঁছান। বিকাল পাঁচটার দিকে একই পথে তারা ফিরে আসেন।

উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের ২০ রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যারা রোহিঙ্গাসংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত তাদের মধ্যে ৭ কর্মকর্তা এই সফরে যান। রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৭ পুরুষ ও তিন নারী ছিলেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। প্রতিনিধি দলের সহযোগিতার জন্য ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি),পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সরকারি একাধিক সংস্থার আরও সাতজন সদস্য।

ওই সফরে থাকা রোহিঙ্গা আবু সুফিয়ান জানান, মংডু শহরের আশপাশে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখেছেন তারা। সেখানে গ্রামের কোনো অস্তিত্ব নেই। সবকিছু পাল্টে গেছে। তবে (মিয়ানমার সেনাবাহিনী) সারি সারি ক্যাম্প তৈরি করেছে। এসব ক্যাম্পেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাখার পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার।

রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের কয়েকজন সেখানকার পরিস্থিতি অসন্তোষজনক জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মংডুতে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য যে ‘মডেল ভিলেজ’ নির্মাণ করা হচ্ছে, তাতে থাকতে রাজি হবে না রোহিঙ্গারা। জন্মভূমিতে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা না পেলে কোনো রোহিঙ্গাই রাখাইনে ফিরতে রাজি হবে না।

সফরে থাকা মোহাম্মদ সেলিম নামে এক রোহিঙ্গা জানান, মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি নিজেই কথা বলেছেন। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানালেও তাকে জানানো হয়েছে আপাতত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। এনভিসি কার্ডে তাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে। মিয়ানমারের এমন শর্তে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনে আগ্রহী হবে বলে মনে হয় না।

রাখাইনে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের প্রধান মোহাম্মদ ছলিম বলেন, ‘রাখাইনে ১৫টি গ্রাম পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক কী পরিমাণ অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, তা দেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

‘তবে তারা প্রত্যাবাসনের আগে নাগরিকত্ব না দিয়ে এনবিসি কার্ড (অতিথি কার্ড) দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেতে চায়। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেখানে যাওয়ার ছয় মাস পর নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এর উত্তরে আমরা বলেছি, আগে নাগরিকত্ব দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে।’

কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশ পরিদর্শনকালে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি দেখা গেছে। সেখানে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা, ব্যবসা করা মানুষের ৮০ শতাংশই দেখা গেছে রোহিঙ্গারা। সেখানে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে।

মিয়ানমারের একটি দল দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে আসবে এবং ওই সফরে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে পরবর্তী আলাপ-আলোচনা হবে বলেও জানান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের কয়েকজন সদস্য বলেছেন ‘জন্মভূমিতে পুনর্বাসন করা না হলে রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরবেন না’। এ বিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ রকম কথা বললে সমস্যার সমাধান হবে না। দুপক্ষকে ছাড় দিতে হবে। সন্তুষ্টির বিষয়টা আপেক্ষিক।’

‘যে সমস্যাটি ৬০-৭০ বছর ধরে সমাধান হচ্ছে না, তা এক-দুইদিনে কীভাবে সম্ভব? আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই। প্রত্যাবাসন যেন টেকসই হয়, সেই নিরিখে কাজ হচ্ছে’—যুক্ত করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপ প্রশাসকের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পর প্রতি পরিবারকে মডেল ভিলেজে একটি করে ঘর, কৃষি কাজের জন্য জমি, সার ও বীজ দেওয়া হবে।

আরআরআরসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পর ২০১৮ সালে মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই তালিকা যাচাইবাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০১৯ সালের আগস্টে চীনের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আরেকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়।

তবে মিয়ানমারের নাগরিকত্বের বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যেতে চায়নি। এখন আবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের তরফ থেকে তৃতীয় দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews