1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন

এক দফায় অনঢ় শিক্ষার্থীরা, চান নির্বাহী হস্তক্ষেপ

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪
  • ৩৭ Time View

অনলাইন ডেস্ক : সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবারও সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ শীর্ষক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে তারা এ কর্মসূচি পালন করবেন।

বুধবার সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন শেষে রাজধানীর শাহবাগ চত্বর থেকে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।

এর আগে বুধবার রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে সড়ক ও রেলপথ অবরোধে স্থবির হয়ে পড়ে সব ধরনের যান চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। এমনকি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ পালন শেষে শাহবাগে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখানে আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মূল একটি অংশ অবস্থানে ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার পর শাহবাগ থেকে আজ বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। সারাদেশের অন্যান্য পয়েন্টেও সন্ধ্যার পর অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে শাহবাগে নতুন কর্মসূচি ঘোষণায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসিফ বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে, রাজপথে ও রেললাইনে শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে আমরা ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করব। সারাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের নিকটস্থ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন।’

নির্বাহী বিভাগের উদ্দেশে আসিফ বলেন, ‘অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিটি মেনে নিন, যাতে আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে পারি, যাতে রোদের তাপে আমাদের পুড়তে না হয় এবং জনদুর্ভোগেরও সৃষ্টি না হয়।’

কোটা সংস্কারের একদফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকেই সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে স্থিতাবস্থা দিয়েছে আপিল বিভাগ। চার সপ্তাহ পর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে। এ সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে সরকারের দেওয়া পরিপত্র বহাল থাকবে।

তবে আপিল বিভাগের এ সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত সমাধান দেখছেন না আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, তাদের দাবি সরকার অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগের কাছে। এ দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে তারা রাজপথে থাকবেন।

এ আগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেলপথ এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত থাকবে বলে আগের দিনই জানিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে গতাকাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে অনেক জায়গায় ঢাকার সঙ্গে আঞ্চলিক এবং অনেক এলাকায় অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়।

এদিন রাজধানীর শাহবাগ, গুলিস্তান, চাঁনখারপুর, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মিন্টো রোড, ফার্মগেট, আগারগাঁওসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। টানা বাংলা ব্লকেডে থেমে গেছে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ। অফিস ফেরত যাত্রী, ঢাকা থেকে মফস্বলগামী যাত্রী, শিক্ষার্থী ও অসস্থ রোগীরা এতে বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে নারী শিশু ও বয়স্করা ভোগান্তিতে পড়েছেন বেশি। সামর্থবার অন্যরা বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে গন্তেব্যে পৌঁছার চেষ্টা করলেও নারী-শিশু ও বয়স্করা পথেই বসে পড়ছেন ক্লান্ত হয়ে।

বুধবার দুপুর পৌনে ১২টা থেকেই ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেওয়ার পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রেল চলাচল শুরু হয়। দীর্ঘ সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় রেলের সূচিতে বিপর্যয় দেখা দেয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহসহ দেশের সাতটি স্থানে আন্দোলনকারীরা রেলপথ অবরোধ করেন। এ সময় ঢাকায় কোনো ট্রেন প্রবেশ করতে বা বের হতে পারেনি।

রাজধানীর শাহবাগ থেকে ঢাকা টাইমসের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শেখ শাকিল হোসেন জানান, সকালে ঢাবি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা এখান থেকে শাহবাগ পয়েন্টে অবস্থান নেন। সেখানে তারা পুরো শাহবাগ পয়েন্ট অবরুদ্ধ করেন।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি পয়েন্ট সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন বলে জানান সেখানে থাকা ঢাকা টাইমস প্রতিবেদক মো. মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম।

ঢাকা টাইমস প্রতিবেদক জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও মিছিল সহকারে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে এসে অবস্থান নেন। এছাড়াও ঢাবি অধিভুক্ত আরও কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরও সেখানে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে রাজধানীর অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা কারওয়ান বাজারের সড়ক অন্যদিনের তুলনায় অনেকটাই ফাঁকা বলে জানিয়েছেন সেখানে থাকা ঢাকা টাইমস প্রতিবেদক তানিয়া আক্তার। এদিন কারওয়ান বাজারে রেল ক্রসিংয়ে কাঠের গুড়ি ফেলে অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ফলে সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রাজধানীর রেল যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়।

কারওয়ান বাজারে থাকা আনসার সদস্য শহিদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা শুনেছি আজ ছাত্র আন্দোলন আছে। সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’

তানিয়া আক্তার জানান, অন্যদিনের তুলনায় কারওয়ান বাজার এলাকায় যানবাহনের চাপ একেবারেই কম। ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে থাকতে হচ্ছে না বিধায় পয়েন্টও দ্রুত খালি হয়ে যাচ্ছে। এর আগে সকাল সাড়ে দশটার দিকে আগারগাঁওয়েও একই রকম চিত্র দেখেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের পথে গুরুত্বপূর্ণ আরিচা মহাসড়ক সকাল ১০টা থেকে অবরোধ করে রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে থাকা ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে এই মহাসড়কে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

এদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো বুধবার রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট অংশ অবরোধ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সরকারি কবি নজরুল কলেজ ও সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা অবরোধ করেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই পথে যাতায়াতকারী যাত্রীরা।

এদিক চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রতাশীরা। ঢাকা টাইমসের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জানান, চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানহাটে রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামের সাথে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি ফারজানা খান সারথি জানান, সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড এলাকায় অবস্থান নেনে। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল করে বিক্ষোভ দেখান।

এদিকে ঢাকা টাইমসের কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি আহসান হাবীব রানা জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর ফলে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল অনেকটাই বন্ধ হয়ে পড়ে।

চতুর্থদিনের মতো বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি অংশ অবরোধ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। ফলে সড়কে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাতায়াতকারী যাত্রীরা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বুধবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি অবরোধ করেন।

সকাল সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা আবারো ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেছেন।

এদিকে সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে জড়ো হয়ে সড়কটি অবরোধ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে তাদের এ অবরোধ কর্মসূচি।

বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দেওয়ানগঞ্জগামী ‘তিস্তা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি অবরোধ করেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা। এতে করে চতুর্থবারের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করলেন তারা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেনটিতে থাকা শত শত যাত্রী।

সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধিতা করে গত ৭ ও ৮ জুলাইও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।

শিক্ষার্থীদের এমন কর্মসূচিতে ওই দুদিন দুপুরের পর রাজধানী ঢাকার সড়ক কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল। অশেষ ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। তবে মঙ্গলবার এ ধরনের কর্মসূচির পরিবর্তে অনলাইন-অফলাইনে গণসংযোগ করেন তারা।

পরে ওইদিন সন্ধ্যায় বুধবার সকাল-সন্ধ্যা সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এমন কর্মসূচিতে মানুষের ভোগান্তি হওয়ার কথা স্বীকার করেন এ প্লাটফর্মের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘৫ জুন থেকে আমরা আন্দোলনে আছি। হাইকোর্টের রায়ের কারণে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। আমরা চাই না সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি তৈরি হোক। কিন্তু এখনো নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা বা আশ্বাস পাইনি। সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে কোটা বৈষম্য নিরসনের কথা বলছি আমরা।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশই ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। বাকি ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এবং এক শতাংশ কোটা ছিল প্রতিবন্ধীদের।

ওই বছরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। সেসময় শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল কোটা ৫৬ শতাংশ না হয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। তাদের দাবির মুখে ওই বছরই সরকারি চাকরিতে পুরো কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

তবে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরে পাওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন। গত ৫ জুন ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

গত ৪ জুলাই কোটার পক্ষের এক আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি করেন আদালত। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আপিল বিভাগ নট টুডে (৪ জুলাই নয়) বলে আদেশ দেন।

পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ঢাবির ওই দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন।

তবে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে, তাদের পক্ষ থেকে কোনো আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়নি। যে দুই শিক্ষার্থী আদালতে গেছেন তারা নিজ উদ্যোগে গেছেন।

হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল ও আইনি লড়াইয়ে শামিল হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীর করা পৃথক আবেদনের আপিল শুনানি নিয়ে বুধবার পূর্বের রায়ে স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে চার সপ্তাহ পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হবে।

গতকালের রায়ের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন বলেন, আদালত (হাইকোর্ট) একটি রায় দিয়েছেন। এমনকি সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গেছে সরকার। আমি মনে করি, এই মুহূর্তে রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা তাদের (শিক্ষার্থীদের) উচিত হবে না। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে এবং এটি নিয়ে রাস্তায় নামা উচিত নয়। এ অবস্থায় তাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ করব।

তিনি আরও বলেন, ‘এ আদেশের ফলে আপাতত কোটা থাকছে না।’ তবে তিনি এও বলেন, ‘আন্দোলন করে কখনো রায় পরিবর্তন করা যায় না। আদালত বলেছেন, প্রতিবাদকারীরা চাইলে আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবেন।’

আদালতের রয়ের ব্যাখ্যায় বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘স্থিতাবস্থা মানে হলো, রিটের আগে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে। আপাতত কোটা নেই। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের পর।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews