1. admin@jn24news.com : admin :
  2. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন

একটা গাছ কাটলে ৩ টা লাগাব: মেয়র তাপস

  • Update Time : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩
  • ৯১ Time View

জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনে কোনো গাছ কাটা হলে তার বদলে তিনটা গাছ লাগানো হবে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ঢাকাকে পর্যটকবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, গাছ আমরা লাগিয়ে যাব। ঢাকাকে অবশ্যই আমরা একটি সুন্দর, সবুজ নগরীতে পরিণত করব। একটা গাছ কাটা হলে তিনটা গাছ লাগাব।

বুধবার ঐতিহ্য বলয়-৫ এর যাত্রাপথ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

ঢাকায় গেজেটভুক্ত ৭৪টি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার মধ্যে ৬৬টির অবস্থান দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায়। এ ৬৬টি স্থাপনাসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক কয়েকটি স্থাপনাকে নিয়ে ৭টি ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তাপস বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নেওয়ার থেকে পর থেকে আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো—ঢাকার যে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো রয়েছে সেগুলোকে সংরক্ষণ করা। দ্বিতীয়ত দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা। যাতে করে পর্যটকরা এখানে এসে ঢাকার ঐতিহ্যকে অনুধাবন করতে পারে, উপভোগ করতে পারে। আমরা বহির্বিশ্বে যেভাবে দেখি, ঐতিহ্যবাহী শহরগুলোতে যেভাবে পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠে আমরা চাই ঢাকা শহরের পর্যটন শিল্পও সেভাবে গড়ে উঠুক। পর্যটকরা ঢাকামুখী হোক। ঢাকা হোক পর্যটকবান্ধব।

সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে দীর্ঘ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে এসব ঐতিহ্য বলয় সৃষ্টির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঐতিহ্যের বলয়-৫ চিহ্নিত করেছি। একজন পর্যটক যদি আসে তাহলে সে এই বলয়ের কোন কোন স্থাপনাগুলো দেখবে, কীভাবে চলাচল করবে, কী কী উপভোগ করবে? এই বিষয়গুলোর খুঁটিনাটি সবকিছু আমরা নির্ণয় করব এবং তাদের জন্য সে সুযোগ সুবিধাগুলো নিশ্চিত করব। সবমিলিয়ে আমাদের মোট সাতটি বলয় হবে। এখানে পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করতে পারবেন। তারা আনন্দ করতে, উপভোগ করতে পারে, খাবার খাওয়াসহ সব সুযোগ-সুবিধা তারা পাবেন।

ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে ৫ নম্বর বলয় শুরু হবে জানিয়ে তাপস বলেন, এরপরে রয়েছে লালবাগ কেল্লা। এই কেল্লার অনেক অংশ ভেঙে গেছে। সেগুলো কীভাবে সংস্কার করা যায় সেটাও আমরা এই বলয়ের আওতায় বিবেচনা করব। এরপর আরেকটি বলয় হলো আহসান মঞ্জিল কেন্দ্রিক। তারপর রূপলাল হাউজ কেন্দ্রিক, এরপর বড় কাটরা ও ছোটকাটরা নিয়ে। এভাবে আমরা বিভিন্নভাবে সাতটি বলয় সৃষ্টি করছি। একজন পর্যটক হেঁটে হেঁটে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই এসব স্থাপনা উপভোগ করতে পারবেন।

সম্প্রতি ধানমন্ডিতে কয়েক শ গাছ কেটে ফেলা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, গাছ কাটা নিয়ে কেউ কেউ মর্মাহত হতেই পারেন। এটা তাদের আবেগের বিষয়। আবার অনেকেই ঢালাওভাবে অনেক কথা বলছেন। পূর্ণ তথ্য না নিয়েই কথা বলেন। আসলে উন্নয়ন কাজে অনেক সময় গাছ কেটে ফেলতে হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু আমরা তখনই করি, যখন নিতান্তই আর কোনো উপায় নেই। সুতরাং, যে গাছগুলোকে কেটে ফেলতে হয়েছে সেই জায়গায় আমরা অবশ্যই অন্য গাছ লাগাব।

তিনি বলেন, উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনে গাছ কাটতে হলে সেখানে আমরা তিনগুণ বেশি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি একটা গাছ অপসারিত হয় তাহলে সেখানে আমরা তিনটা গাছ লাগাব। ওই সড়ক বিভাজনে আমরা আরও অনেক বেশি গাছ লাগাব। এছাড়া আসন্ন বর্ষা মৌসুমে দশ হাজার গাছ লাগাব। এটা চলমান প্রক্রিয়া।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা গত দুই বছরের অধিক সময়ে প্রায় দুই লাখ গাছ রোপণ করেছি। আদি বুড়িগঙ্গায় আমরা প্রায় লক্ষাধিক গাছ লাগাব। তাছাড়া আমাদের খালগুলো নিয়ে যে প্রকল্প পাস হয়েছে সেখানে আমরা লক্ষাধিক গাছ লাগাব। সুতরাং ঢাকাকে সবুজ-শ্যামল করার জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

কোনো নগর পরিকল্পনাবিদের পরামর্শ ছাড়া গাছ কাটা হচ্ছে—এমন অভিযোগের বিষয়ে মেয়র বলেন, এটা আসলে ঢালাওভাবে বলা। আমাদের তিনজন নগর পরিকল্পনাবিদ রয়েছেন। আমি বিভিন্নভাবে স্থপতি, নগর পরিকল্পনাবিদ, ইতিহাসবিদসহ সবাইকে নিয়েই সম্মিলিতভাবে কাজ করে চলেছি। গাছ আমরা লাগিয়ে যাব। ঢাকাকে অবশ্যই আমরা একটি সুন্দর, সবুজ নগরীতে পরিণত করব।

ঐতিহ্য বলয় গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমাদের এখানে একটি ধারণা হচ্ছে- উন্নয়ন মানে বুঝি শুধু অট্টালিকা নির্মাণ। কিন্তু উন্নয়ন মানে হলো অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন। আমি এর আগে কোনো মেয়রকে দেখিনি যিনি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন নিয়ে আগ্রহী। এই প্রথম কোনো মেয়র হিসেবে ফজলে নূর তাপস আগ্রহ দেখিয়েছেন। এই কাজে যদি আমরা সবাই সহযোগিতা করি এবং কাজটি আমরা সম্পূর্ণ করতে পারি, আমার মনে হয় ঢাকার ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর কাছে ফুটে ওঠবে। সবাই মিলে সহযোগিতা করলে মেয়রের উদ্যোগ সফল হবে বলে বিশ্বাস করি।’

এর আগে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মেয়র তাপস।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসেফিকের অধ্যাপক আবু সাঈদ এম আহমেদ, করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম এবং ১৮, ২৫, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews