জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: জাতিগত সহিংসতায় আক্রান্ত মণিপুর রাজ্যের পুলিশের কমান্ডোরা বেশ কয়েকটি এলাকায় রবিবার আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ‘৪০ জন বিদ্রোহী’ নিহত হয়েছেন। জানা গিয়েছে, শান্তি ফেরানোর জন্য চিরুনিতল্লাশি শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তার জেরেই বেধেছে সংঘর্ষ। এখনও অভিযান চালাচ্ছে সেনারা। খবর এনডিটিভির।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং জানিয়েছেন, সোমবার মণিপুরে যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগেই দেখা দিল এমন উত্তেজনা। সফরের পূর্বে তিনি মেইতি এবং কুকি উভয়কেই শান্ত ও শান্তি বজায় রাখার এবং স্বাভাবিক অবস্থা আনতে কাজ করার জন্য আবেদন করেছেন।
বীরেন সিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে এম-১৬ এবং একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল এবং স্নাইপার বন্দুক ব্যবহার করছে। তারা অনেক গ্রামে এসে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে খুব শক্ত পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। আমরা প্রায় ৪০ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করার খবর পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র বেসামরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে। মণিপুরকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টাকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে এবং কেন্দ্রের সহায়তায় রাজ্য সরকারের মধ্যে লড়াই চলছে৷’
রবিবার রাত ২টায় বিদ্রোহীরা একযোগে ইম্ফল উপত্যকায় এবং তার আশেপাশের পাঁচটি এলাকায় আক্রমণ করেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
এলাকাগুলো হলো সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং এবং সেরু। আরও এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ চলছে এবং রাস্তায় লাশ পড়ে থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেকমাই-এ বন্দুকযুদ্ধ শেষ হয়েছে।
রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলের আঞ্চলিক ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (রিমস) চিকিৎসকরা আজ ফোনে এনডিটিভিকে জানিয়েছেন ফায়েং-এ বন্দুকযুদ্ধে আহত ১০ জনকে তারা পেয়েছেন।
বিষেনপুরের চান্দনপোকপিতে একাধিক গুলিবিদ্ধ হয়ে খুমানথেম কেনেডি (২৭) নামের একজন কৃষক নিহত হয়েছেন; তার মরদেহ রিমসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরও হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেনেডি তার স্ত্রী এবং শিশু পুত্রকে রেখে গেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গত দু’দিনে ইম্ফল উপত্যকার উপকণ্ঠে বেসামরিকদের ওপর সহিংস আক্রমণের বৃদ্ধি সুপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে এবং এটি কঠোরভাবে নিন্দনীয়, বিশেষ করে যখন রাজ্যের মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই শান্তি মিশনে মণিপুরে রয়েছেন।
২৫টির বেশি কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় ‘অপারেশন স্থগিত’ (এসওও) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এসওও নিয়মের অধীনে, বিদ্রোহীদের সরকার কর্তৃক চিহ্নিত শিবিরে আবদ্ধ থাকতে হবে এবং তালার নিচে রাখা অস্ত্রগুলি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গতকাল দুদিনের সফরে রাজ্যে গিয়েছিলেন।
ইম্ফল উপত্যকায় এবং এর আশেপাশে বসবাসকারী মেইতি এবং পাহাড়ে বসতি স্থাপনকারী কুকি উপজাতির মধ্যে অব্যাহত জাতিগত সহিংসতা, তফসিলি উপজাতি (এসটি) শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিকে কেন্দ্র করে ৭০ জনের বেশি প্রাণ দিয়েছে। এই সংঘর্ষ শুরু হয় ৩ মে।
মণিপুর ২৫ দিনের বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট বিহীন।
Leave a Reply