জেএন ২৪ নিউজ ডেস্ক: অবশেষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়ের দেখা পেলো শ্রীলঙ্কা। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের দেখা পেলো লঙ্কানরা। এর আগে তিন ম্যাচ খেললেও জয়ের দেখা পায়নি তারা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৯১ রানে ৬ উইকেট হারায় আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করা নেদারল্যান্ডস। দলের এমন বিপদে ত্রাণকর্তা হিসেবে এগিয়ে আসেন সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রাখ ও লোগান ভ্যান বিক। এই জুটিতে ভর করে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৪৯ ওভার ৪ বলে সব উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান তুলতে সক্ষম হয় ডাচরা।
২৬৩ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ১০৪ রানেই হারায় ৩ উইকেট। এর পরেই দলের হাল ধরেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা। এই জুটি থেকে আসে ৭৭ রান। শেষ পর্যন্ত ৪৮ ওবার ২ বল খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় তিুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। সাদিরা সামারাবিক্রমা আজ অপরাজিত থাকেন ৯৪ রানে। লঙ্কানদের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরেরা। কিন্তু নিজেদের জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারলেন না এই দুই ওপেনার।
দলীয় ১৮ রানে কুশল পেরেরার বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। ৮ বলে ৫ রান করা কুশল পেরোরা বাস ডি লিডের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
কুশল পেরেরার বিদায়ের পর কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা। কিন্তু এই জুটিও বেশিদূর যেতে পারেনি। দলীয় ৫২ রানে কুশল মেন্ডিসের বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি।
১৭ বলে ১১ রান করা কুশল মেন্ডিস আরিয়ান দত্তের বলে পল ভ্যান ম্যাকেরানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
কুশল মেন্ডিসের পর সাদিরা সামারাবিক্রমার সঙ্গে জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা। এর মাঝেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন পাথুম নিশাঙ্কা। ৪৮ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৮ টি চারের মার।
তবে অর্ধশতক তুলে নিলেও নিজের ইনিংসকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি পাথুম নিশাঙ্কা। ৫২ বলে ৫৪ রান করে পল ভ্যান ম্যাকেরানের শিকার হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ১০৪ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
পাথুম নিশাঙ্কার বিদায়ের পর জুটি গড়েন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা। এই জুটি থেকে আসে ৭৭ রান। হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা চারিথ আসালাঙ্কা ৬৬ বলে ৪৪ রান করে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি।
১৮১ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জুটি গড়েন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এর মাঝেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। ৫৩ বলে ৫০ রান করেন তিনি।
তবে দলীয় ২৫৭ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। শেষ পর্যন্ত ৪৮ ওভার ২ বলে ৫ উইকেটন হারিয়ে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। সাদিরা সামারাবিক্রমা অপরাজিত থাকেন ৯৪ রানে।
ডাচদের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামা বিক্রমজিৎ সিং, ম্যাক্স ও’ডাউড নিজেদের ওপেনিং জুটিতে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারলেন না। দলীয় ৭ রানে বিক্রমজিৎ সিংয়ের বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। ১৩ বলে ৪ রান করা বিক্রমজিৎ সিং কাসুন রাজিথার বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ৭ রানেই ভাঙে ডাচদের ওপেনিং জুটি।
৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর কোলিন অ্যাকারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন ম্যাক্স ও’ডাউড। কিন্তু দলীয় ৪৮ রানে ম্যাক্স ও’ডাউড প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। এই জুটি থেকে আসে ৪১ রান। ১৭ বরে ১৬ রান করা ম্যাক্স ও’ডাউড কাসুন রাজিথার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। এরপর কোলিন অ্যাকারম্যানও কাসুন রাজিথার তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। আউট হওয়ার আগে করেন ৩১ বলে ২৯ রান। তার বিদায়ে ৫৪ রানেই ৩ উইকেট হারালো ডাচরা। কোলিন অ্যাকারম্যানের পর বাস ডি লিডও ফিরে যান সাজঘরে। দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে ডিপ থার্ড ম্যানে কুশল পেরেরার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে করেন ২১ বলে মাত্র ৬ রান।
বাস ডি লিডের পথ ধরে তেজা নিদামানুরুও ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে এলিবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। প্রথমে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার, তাতে রিভিউ নেয় শ্রীলঙ্কা। আর এতেই কপাল পুড়ে তেজা নিদামানুরুর। প্যাভিলিযনের পথ ধরতে হয় তাকে। তেজা নিদামানুরুর বিদায়ের পর জুটি গড়েন স্কট এডওয়ার্ডস ও সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রাখ। কিন্তু দলীয় ৯১ রানে স্কট এডওয়ার্ডসের বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। ১৬ বলে ১৬ রান করা স্কট এডওয়ার্ডস মাহিশ থিকশানার শিকার হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ৯১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে নেদারল্যান্ডস। ৯১ রানে ৬ উইকেট হারানো নেদারল্যান্ডস দলের হাল ধরেন সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রাখ ও লোগান ভ্যান বিক। এই জুটিতে বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় ডাচরা।
এরই মাঝে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন। ৬৫ বলে ৫০ রান করেন সাইব্র্যান্ড। যার মধ্যে রয়েছে ৩টি চার ও ১টি ছয়ের মার।
কিন্তু দলীয় ২২১ রানে সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রাখের বিদায়ে ১৩০ রানে ভেঙে যায় এই জুটি। ৮২ বলে ৭০ রান করা সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রাখ দিলশান মাদুশাঙ্কার শিকার হয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রাখের বিদায়ের পর রুলফ ভ্যান ডার মারওয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধেন লোগান ভ্যান বিক। এর মাঝেই তিনি তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ৬৮ বলে ৫০ রান করেন তিনি।
তবে এই জুটিও বেশি সময় টিকতে পারেনি। দলীয় ২৪৪ রানে রুলফ ভ্যান ডার মারওয়ের বিদায়ের পর ভেঙে যায় এই জুটি। ৭ বলে ৭ রান করে ফিরে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৯ ওবার ৪ বল খেলে সব উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান করতে সক্ষম হয় ডাচরা। শ্রীলঙ্কার হয়ে দিলশান মাদুশাঙ্কা ৪ টি, কাসুন রাজিথা ৪ টি ও মাহিশ থিকশানা ১ টি উইকেট নেন।
Leave a Reply